Ajker Patrika

এহসান গ্রুপের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
এহসান গ্রুপের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়

ঠিক ছয় মাস আগে ১২ লাখ টাকা ‘এহসান গ্রুপে’ জমা রাখেন মুনিয়া। চুক্তি অনুযায়ী মাসে ২৪ হাজার করে টাকা পাবেন। চাইলেই তুলতে পারবেন মূল টাকা। এমন লিখিত চুক্তি পছন্দ হয় পিরোজপুর সদরের এই স্কুলশিক্ষকের। কিন্তু ছয় মাস পর লাভের অংশ বা মূল টাকা—কোনোটাই আর ফেরত পাননি।

র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আজকের পত্রিকাকে বলেন, মাল্টিপারপাস কোম্পানি এহসান গ্রুপের পরিচালক মুফতি মাওলানা রাগীব আহসানকে আটকের পর এমন অনেক ফোন আসছে। অভিযোগ করছেন কোটি কোটি টাকা প্রতারণার।

স্কুলশিক্ষক মুনিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অধিক লাভের আশায় এহসান সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিমিটেডে টাকা জমা করি। এমনভাবে প্রতারিত হব, তা বুঝতে পারিনি। তবে আমি একা নয়, আমার অনেক আত্মীয়ও এমন প্রতারণার শিকার হয়েছেন।’

পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আ জ মো. মাসুদুজ্জামান বলেন, গতকাল শনিবার সদর থানাতে এমন তিনটি মামলা হয়েছে। আরও অনেকের অভিযোগ আসছে।

এদিকে এহসান গ্রুপের কাছে পাওনা টাকা ফিরে পেতে পিরোজপুর শহরের বাইপাস সড়কে প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, এহসান গ্রুপের সব প্রতিষ্ঠান ও সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করা হোক। গ্রাহকদের টাকায় কেনা এহসান গ্রুপের সব জমি, ১৭টি প্রতিষ্ঠান ও সম্পত্তি জেলা প্রশাসনের দায়িত্বে রাখা হোক। আর ১০ হাজার গ্রাহকের প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হোক। সমাবেশ শেষে রাস্তা অবরোধ করে এহসান গ্রুপের পরিচালক রাগীব আহসানের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন বিক্ষুব্ধরা। পরে পুলিশের সহায়তায় রাস্তা ছেড়ে দেওয়া হয়।

পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ জেড এম মাসুদুজ্জামান বলেন, হারুন অর রশিদ নামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে ৯৭ জন ব্যক্তি লভ্যাংশ পাওয়ার আশায় ১ কোটি ১৫ লাখ ৫৫ হাজার ৯৩৩ টাকা রাগীব আহসানের পরিচালিত এহসান রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড বিল্ডার্স লিমিটেডে জমা রাখেন। ওই টাকা রাগীব আহসান ফেরত না দিয়ে আত্মসাৎ করেন। এ ঘটনায় হারুন অর রশিদ থানায় মামলা করেন। গত বৃহস্পতিবার পুলিশ পিরোজপুর থেকে গ্রুপটির সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান ও পরিচালনা কমিটির সদস্য খায়রুল ইসলামকে গ্রেপ্তার হয়। তাঁরা দুজনই রাগীব আহসানের ভাই।

জানা যায়, রাগীব আহসান ছিলেন মসজিদের ইমাম। পরে ঢাকার একটি এমএলএম (মাল্টি লেভেল মার্কেটিং) কোম্পানিতে কাজ নেন। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে গড়ে তোলেন এহসান গ্রুপ। নিয়োগ দেন কওমি মাদ্রাসার ছাত্র, শিক্ষক ও মসজিদের ইমামদের। তাঁরা মাহফিলে অধিক মুনাফা দেওয়ার কথা প্রচার করে মানুষের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ শুরু করেন। এমন ১৭ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গ্রুপের চেয়ারম্যান রাগীব আহসান ও তাঁর সহযোগীকে গত শুক্রবার পল্টন থেকে আটক করে র‍্যাব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত