Ajker Patrika

তিন বছরের শিশুকে পানির ট্যাংকে ফেলে হত্যা, ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড

আদালত প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
তিন বছরের শিশুকে পানির ট্যাংকে ফেলে হত্যা, ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড

চট্টগ্রাম নগরের দক্ষিণ বাকলিয়ায় দুই বছর আগে একটি বাড়ির পানির ট্যাংকে ডুবিয়ে দুই বছরের শিশু আব্দুর রহমান ওরফে আরাফ হত্যা মামলার রায়ে মা ও ছেলেসহ তিনজনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার চট্টগ্রাম তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিন তিন আসামির উপস্থিতিতে এ রায় দেন। রায় ঘোষণার পর আদালত আসামিদের কারাগারে পাঠিয়ে দেন। 

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত মহানগর পিপি প্রবীর কুমার ভট্টাচার্য আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, হত্যার পরিকল্পনাকারী মো. ফরিদ (৩৭)। তিনি চট্টগ্রামের পটিয়া থানার কুসুমপুরা ইউনিয়নের পানুয়াপাড়ার জনৈক আব্দুল মোতালেবের ছেলে। ঘটনাস্থলের বাড়ির বাসিন্দা নাজমা বেগম (৪০)। তিনি কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানার বাখরনগরের জনৈক তাজুল ইসলামের স্ত্রী এবং নাজমার ছেলে মো. হাসান (২৩)। 

পিপি প্রবীর কুমার ভট্টাচার্য বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ন্যায়বিচার পেয়েছেন। তিনি হাইকোর্টের অনুমোদন সাপেক্ষে এ রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানান।

আদালত সূত্রে জানা যায়, আসামি ফরিদ স্থানীয় কাউন্সিলর প্রার্থী ইয়াসিন চৌধুরী আশুর পক্ষে কাজ করতেন। আশুর সঙ্গে তাঁর আপন ভাই বর্তমান ১৯ নম্বর দক্ষিণ বাকলিয়া ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুল আলম মিয়ার আগে থেকে বিরোধ ছিল। ইয়াসিন চৌধুরী আশু এবং কাউন্সিলর নুরুল আলম মিয়ার বিরোধের সুযোগে নুরুল আলমকে ফাঁসানোর ষড়যন্ত্র শুরু করেন আসামি ফরিদ। নুরুল আলমের বাড়ির (মিয়া বিল্ডিং) ভাড়াটিয়া আব্দুল কাইয়ুমের দুই বছরের ছেলে আরাফকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে ফরিদ। এ কাজে তিনি ২০ হাজার টাকায় নাজমাকে রাজি করতে সক্ষম হন। মিয়া বিল্ডিংয়ের ৭ম তলার ছাদের একটি কক্ষে বসবাস করতেন নাজমা। মিয়া বিল্ডিংয়ের দারোয়ান হিসেবে কাজ করে নাজমার ছেলে হাসান। পরিকল্পনা মতে ২০২০ সালের ৭ জুন বিকেলে নাজমা শিশু আরাফকে ছাদে নিয়ে পানির ট্যাংকে ফেলে হত্যা করে। এতে সহায়তা করেন তাঁর ছেলে হাসান। পরে আরাফকে না পেয়ে তার বাবা কাইয়ুম বাকলিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। রাতে মাইকে এলাকায় নিখোঁজ সংবাদ প্রচার করে। 

আরও জানা যায়, এ ঘোষণা শুনতে পেয়ে মিয়া ভবনের পাশের বাড়ির এক মহিলা কাইয়ুমকে জানান বিকেলে তিনি এক মহিলাকে বাচ্চা কোলে ছাদে উঠতে দেখেছেন, কিন্তু মহিলাটি নেমে যাওয়ার সময় বাচ্চাটিকে দেখতে পাননি। এ ঘটনার সূত্র ধরে পুলিশ পরদিন নাজমাকে গ্রেপ্তার করে। তার স্বীকারোক্তি মতে দুই দিন পর অপর দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে। নাজমা ও হাসান আদালতে ঘটনার দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাকলিয়া থানার এস আই মো. আমির হোসেন সে বছর ২৭ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র দেন। চলতি বছরের ১০ মার্চ আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ২০ জন সাক্ষ্য দেন। আসামিদের পক্ষে সাফাই সাক্ষ্য দেন আরও ১০ জন। আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হওয়ায় আদালত এ রায় দেন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত