Ajker Patrika

টাঙ্গাইলের এমপির ভাই বড় মনিরের বিরুদ্ধে এবার ‘ফেসবুক বন্ধু’ তরুণীকে ধর্ষণের মামলা

উত্তরা (ঢাকা) প্রতিনিধি
আপডেট : ৩০ মার্চ ২০২৪, ১৭: ২৫
টাঙ্গাইলের এমপির ভাই বড় মনিরের বিরুদ্ধে এবার ‘ফেসবুক বন্ধু’ তরুণীকে ধর্ষণের মামলা

টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও টাঙ্গাইল-২ আসনের সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনিরের বড় ভাই গোলাম কিবরিয়া ওরফে বড় মনিরের বিরুদ্ধে এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শুক্রবার রাতের এ ঘটনায় তুরাগ থানায় মামলা হয়েছে।

এ বিষয়ে তুরাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু সাঈদ মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। ভিকটিম ও তাঁর বাবা অভিযোগ করেছেন, বড় মনির এ ঘটনা ঘটিয়েছে।’ 

উত্তরার প্রিয়াংকা সিটির ৬ নম্বর সড়কের ৭ নম্বর বাড়ির তৃতীয় তলার একটি ফ্ল্যাটে এ ঘটনা ঘটে। রাত ১টার দিকে পুলিশের উপস্থিতিতে ভুক্তভোগী ওই তরুণী আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেন। তুরাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু সাঈদ মিয়া, এসআই (উপপরিদর্শক) হাসিব, এসআই রমজান, এএসআই হাবিবসহ থানা-পুলিশের একাধিক সদস্য সেখানে ছিলেন।

উত্তরার প্রিয়াংকা সিটির ৬ নম্বর সড়কের ৭ নম্বর বাড়ির তৃতীয় তলার একটি ফ্ল্যাটে এ ঘটনা ঘটে। ওই তরুণী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বড় মনিরের সঙ্গে আমার ফেসবুকে পরিচয়। পরে তাঁর সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ হয়। তারপর (গতকাল শুক্রবার) তাঁর সঙ্গে দেখা করতে উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরের অ্যাপেক্স শোরুমের পাশে যাই। ওই সময় সে (বড় মনির) একটি গাড়ি নিয়ে আসে। পরে গাড়ি ছেড়ে দিয়ে আমাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে রিকশায় করে ঘটনাস্থলে এনে ধর্ষণ করে।’

ওই তরুণী আরও জানান, পরে বড় মনির তাকে সঙ্গে নিয়ে বের হয়ে একসঙ্গে রিকশায় ওঠেন। এক পর্যায়ে তাঁর স্বামী ভিডিও কল দিলে বড় মনির রিকশা থেকে নেমে পালিয়ে যান। 

পরে রাত আড়াইটার দিকে ভুক্তভোগী তরুণীকে তুরাগ থানার পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। সেই সঙ্গে বাড়ির গার্ড বকুলকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেয় পুলিশ। 

ভুক্তভোগীর বাবা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার মেয়ে ফোন করে আমাকে বলে, বড় মনির আমাকে ধর্ষণ করেছে। খবর পেয়ে আমি ২০ মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে আসি।’

উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ এপ্রিল রাতে টাঙ্গাইল শহরের এক কিশোরী বাদী হয়ে বড় মনিরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করে। টাঙ্গাইল মডেল থানায় দায়ের করা মামলায় বলা হয়, জমি নিয়ে বিরোধ সমাধানের জন্য বড় মনিরের শরণাপন্ন হয় ওই কিশোরী। বড় মনির সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। 

পরে ২০২২ সালের ১৭ ডিসেম্বর ওই কিশোরীকে শহরের আদালতপাড়ায় বড় মনির তাঁর বাড়ির পাশে একটি ফ্ল্যাটে যেতে বলেন। সেখানে গেলে কিশোরীকে একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়। প্রায় তিন ঘণ্টা পর বড় মনির কক্ষে ঢুকে মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন এবং সেই ছবি তুলে রাখেন। 

ধর্ষণ শেষে কাউকে এ কথা জানাতে নিষেধ করেন বড় মনির। কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকিও দেন তিনি। এরপর ছবি প্রকাশের ভয় দেখিয়ে প্রায়ই মেয়েটিকে বড় মনির ধর্ষণ করতেন বলেও উল্লেখ করা হয় মামলার অভিযোগে। 

মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, ধর্ষণের কারণে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বড় মনির তাকে গর্ভপাত করার জন্য চাপ দিতে থাকেন। রাজি না হওয়ায় গত বছরের ২৯ মার্চ রাত ৮টার দিকে বড় মনির মেয়েটিকে আদালতপাড়ায় তাঁর শ্বশুরবাড়িতে তুলে নিয়ে যান। সেখানে গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ দেন তিনি। এতেও রাজি না হওয়ায় ওই বাসার একটি কক্ষে তালাবদ্ধ করে রাখা হয় মেয়েটিকে। 

সেখানে আবারও ধর্ষণ করেন বড় মনির। ধর্ষণের পর ভুক্তভোগী কিশোরীকে বড় মনিরের স্ত্রী মারধর করলে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে রাত ৩টার দিকে বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয় তাকে। এরপর থেকে ওই কিশোরীকে নানা হুমকি দেওয়া হতো। শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ থাকায় মামলা করতে দেরি হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করে বাদী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত