Ajker Patrika

‘লকডাউন’, চিন্তিত সিলেটের নিম্ন আয়ের মানুষ

প্রতিনিধি, সিলেট
‘লকডাউন’, চিন্তিত সিলেটের নিম্ন আয়ের মানুষ

‘লকডাউন না, গরিবের মরার রাস্তা। বাইরে আসলে করোনায় মরবো আর ঘরে থাকলে না খেয়ে মরবো’। কথাগুলো সিলেট নগরীর ফুটপাতে পান সিগারেট বিক্রেতা বর্জা সেনের। করোনা সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত ৭ দিনের কঠোর নিষেধাজ্ঞার প্রথম দিনে এমন হতাশা প্রকাশ করেন সিলেটের আরও বেশ কয়েকজন নিম্ন আয়ের মানুষ।

বর্জার বাড়ি সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলায়। করোনা আসার আগে অন্য পেশায় থাকলেও করোনা তাকে এ পেশায় নামিয়েছে। এখন এ নিষেধাজ্ঞায় বিক্রি বন্ধ রাখতে হলে কিভাবে সংসার চলবে তা নিয়ে শঙ্কিত তিনি।

সিলেট নগরীর বেশ কয়েকজন নিম্ন আয়ের মানুষের সাথে কথা বলেছে আজকের পত্রিকার সিলেট প্রতিনিধি।

জেলরোড এলাকার চা বিক্রেতা আজির আলীর দৈনিক আয় ৬’শ টাকার বেশি। এ দিয়ে স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে ভালোই চলে তার সংসার। তিনি জানান, আগামী ৭ দিন বিক্রি বন্ধ থাকলে তার সব হিসেব ওলটপালট হয়ে যাবে। সংসারের টানাপড়েন, এসএসসি পরীক্ষার্থী বড় মেয়ের পড়াশোনায়ও এর প্রভাব পড়বে বলে আরও বেশি শঙ্কিত তিনি।

পরিস্থিতি বুঝতে পেরে আজির বলেন, করোনা সংক্রমণ বাড়ছে সত্যি। সরকার কঠোর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তবে আমাদের মত গরীবরা খাবো কেমনে? সরকার আমাদের দিকে সাহায্যের হাত না বাড়ালে দু-বেলা খেয়ে বাঁচাই কঠিন হয়ে যাবে।

গতবারের সাধারণ ছুটির সময় ঋণ পরিশোধ করার আগেই নতুন আবার কপালে ভাঁজ পড়েছে জালালাবাদের বাসিন্দা ইলেকট্রিক মিস্ত্রী ইমরান আহমদের। ২০২০ সালের সাধারণ ছুটিতে অনেকের কাছ থেকে মাঝেমধ্যে সহায়তা পেলেও এবার কি হবে তা জানা নেই তার।

নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন লোক চলাচল কম হওয়ার আশংকায় রিকশা চালক আব্দুল খালেক বলেন, ‘লকডাউনে গরীবের যত সমস্যা। রিকশা চালিয়ে সংসার চালাই। রাস্তায় বের না হলে আমাদের পেটে ভাত পড়ে না। লকডাউনে রিকশা বন্ধ হয়ে গেলে খাব কি জানি না।’

একটি প্রাইভেট কোম্পানির খণ্ডকালীন প্রজেক্টে কাজ করেন মিরাবাজার এলাকার বাসিন্দা রফিক উদ্দিন। ২০২০ সালে সাধারণ ছুটিতে প্রজেক্টের কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চাকরি হারান তিনি। তখন বাধ্য হয়ে পরিবারের সবাইকে গ্রামে পাঠিয়ে দেন। নতুন করে পাওয়া প্রজেক্টের চাকরিটা নিয়েও এখন তিনি শঙ্কিত।

তবে সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি সহযোগিতা কার্যক্রম চালু আছে। আমরা চেষ্টা করবো যারা বেশি সমস্যায় আছেন তাদের খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিতে। সামর্থ্যবানদের প্রতি ব্যক্তিগত উদ্যোগে অসহায়দের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বানও জানান তিনি’।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত