Ajker Patrika

হাওর এলাকায় দেশীয় মাছের অভাব

প্রতিনিধি
হাওর এলাকায় দেশীয় মাছের অভাব


সুনামগঞ্জ: জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এবার আষাঢ়ের ঢলের পানি সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে বিলম্বে আসছে। তাই হাওর জলাশয়ে পর্যাপ্ত পানি প্রবেশ করেনি। নতুন পানি না আসায় মাছের রেণু পোনা বড় হতে সময় লাগবে বেশি। এই কারণে জেলার বিভিন্ন হাট বাজারে দেশীয় মিঠাপানির মাছের আকাল দেখা দিয়েছে। 

সুনামগঞ্জ শহর ও শহরতলির এবং বিভিন্ন উপজেলার হাট-বাজার ঘুরে দেশীয় মাছের সংকট দেখা যায়। জেলার সকল হাট বাজারে চাষের মাছ বিক্রি হচ্ছে। পুকুরে চাষকৃত পাঙাশ, পুটি, পাবদা, ব্রিগেড, তেলাপিয়া, ট্যাংরা, কৈ, ঘাস কার্প, সিলভারকার্প, কাতলা, রুই, গনিয়া, কার্গো, সিং, মাগুর, পাবদা ইত্যাদি মাছ কিনে নিতে হচ্ছে ক্রেতাদের। পুকুরের মাছের কদর কম থাকলেও বাধ্য হয়ে কিনছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। 

বিগত বছরগুলোতে বর্ষা শুরু হয়েছে এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে। ওই সময় থেকে নদীতে পানি বাড়তে থাকে। ঢল আসে পাহাড় থেকে বেয়ে আসা নদী ও ছড়া দিয়ে। জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে জেলার বিভিন্ন হাওর জলাশয়ে পানি ঢুকে একাকার হয়ে যায়। ঢলের নতুন পানিতে মাছের রেণু পোনা ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে বিভিন্ন হাওর, জলাশয় ও নদীতে। এ বছর অনেকটা ব্যতিক্রম হয়েছে। নদীতে সামান্য পানি বেড়েছে। সামান্য পরিমাণের পানি মাছের রেণু পোনা বড় হওয়ার মতো পর্যাপ্ত নয়। পাহাড়ি ঢল না আসলে মৎস্য উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। 

একাধিক মৎস্যজীবী জানান, এবার নদীতে বৃষ্টির পানি বেড়েছে। কিন্তু ঢলের পানি আসে নি। ঢলের পানি না আসলে হাওরে পর্যাপ্ত পানি প্রবেশ করবে না। তখন দেশীয় মাছের রেণু পোনা বড়ও হবে না। 
শহরের বাজারে মাছ কিনতে আসা আব্দুল কাইয়ুম মোল্লা জানান, বাজার জুড়ে চাষের মাছ। পরিবারকে বোঝাতে মাছ কিনেছি। রান্নার পর স্বাদ কম পাওয়া যায়। তবুও কিনে নিতে হয়। 

সদর উপজেলার মৎস্যজীবী ফারুক আহমদ, আব্দুশ শহীদ, ইনছান আলী জানান, এবার দেরিতে ঢলের পানি আসায় মাছের বংশ ধ্বংস হচ্ছে। এই মৌসুমে পর্যাপ্ত পানি না পাওয়ায় যেমন মাছের পোনার ক্ষতি হচ্ছে, তেমনিভাবে পোনা নিধন করছে অসাধু মৎস্যজীবীরা। এসব কারণে এবার মাছের উৎপাদন কম হতে পারে। 

জেলা ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি মো. আলাউর রহমান বলেন, এবার বর্ষার পানি দেরিতে আসছে। বৃষ্টির পানি হাওরে ঢুকেছে। ঢলের পানি না আসলে মাছের পোনা বড় হবে না। পোনার বিস্তৃতি ঘটবে না। মাছের উৎপাদন ভালো হবে না। 

সদর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সীমা রাণী বিশ্বাস বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বর্ষা দেরিতে শুরু হচ্ছে। এই কারণে দেশীয় মাছের প্রজনন অনেকটা ব্যাহত হচ্ছে। হাওর বা নদীতে মাছের পোনা রক্ষায় অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। স্থানীয়রা সচেতন হলে মৎস্য সম্পদ রক্ষা পাবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত