Ajker Patrika

নাকের পলিপাসের অস্ত্রোপচারে প্রকৌশলীর মৃত্যুর অভিযোগ

পাবনা প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২২, ১০: ০৫
নাকের পলিপাসের অস্ত্রোপচারে প্রকৌশলীর মৃত্যুর অভিযোগ

নাকের পলিপাসের অস্ত্রোপচারের সময় ভুল চিকিৎসা ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় সিরাজুল ইসলাম (৩০) নামের এক টেক্সটাইল প্রকৌশলীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। আজ শুক্রবার দুপুরে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট পাবনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে পাবনার পৌর সদরের গোপালপুরের লাহিড়ীপাড়া এলাকার ডিজিটাল হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। 

সিরাজুল ইসলাম পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের তিলকপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি এক স্পিনিং মিলসের প্রোডাকশন কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। দুই বছর বয়সী এক ছেলেসন্তানের জনক তিনি। 

স্বজনেরা অভিযোগ করেন, এক সপ্তাহ আগে পাবনা ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক চিকিৎসক হারুন-অর-রশিদের চেম্বারে চিকিৎসা নেন সিরাজুল। সে সময় চিকিৎসক তাঁকে লাহিড়ীপাড়া এলাকায় ডিজিটাল হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেন। 

স্বজনেরা জানান, ওই চিকিৎসকের পরামর্শে সিরাজুল গত মঙ্গলবার ঢাকা থেকে পাবনায় আসেন। পরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে চিকিৎসক হারুন-অর-রশিদ ও পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক (অ্যানেসথেসিয়া) চিকিৎসক শামসুল হকের তত্ত্বাবধানে ওই হাসপাতালে পলিপাসের অস্ত্রোপচার করেন। 

পরিবারের অভিযোগ, ‘অস্ত্রোপচার শেষে চিকিৎসকেরা চলে যাওয়ার পরপরই রোগীর অবস্থা অবনতি হতে থাকে। এ সময় চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ডাকলেও তারা গুরুত্ব দেয়নি। রাত ৮টার দিকে চিকিৎসকেরা দেখেন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। 

এদিকে অবস্থা বেগতিক দেখে চিকিৎসক হারুন-অর-রশিদ, শামসুল হক, হাসপাতালের ম্যানেজারসহ কর্তৃপক্ষ পালিয়ে যায়। পরে স্বজনরা ৯৯৯-এ কল দিলে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে বলে জানান নিহতের পরিবার। 

এ বিষয়ে জানতে চিকিৎসক হারুন-অর-রশিদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। 

তবে অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসক শামসুল হক বলেন, ‘আমি যখন তাঁকে অ্যানেসথেসিয়া করি তখন তিনি সুস্থ ছিলেন। অস্ত্রোপচারের পর তার জ্ঞান ফিরেছিল, সে সময় তাঁর সঙ্গে আমার কথাও হয়েছে। পরে তার মৃত্যু কীভাবে হলো এটা এই মুহূর্তে বলতে পারব না। তবে আমাদের ভুল চিকিৎসায় তার মৃত্যু হয়নি।’ 

ওই হাসপাতালের ম্যানেজারকে পাওয়া না গেলেও সহকারী ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম ও অপারেশন থিয়েটারের (ওটি) ইনচার্জ সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘কিসের জন্য মারা গেল আমরা সেটা বলতে পারছি না। তবে তার ফিটনেস রিপোর্ট ভালো ছিল।’ 

পাবনা সিভিল সার্জন ডা. মনিসর চৌধুরী বলেন, ‘অভিযোগ দিলে আমরা তদন্ত করে দেখব।’ 

এর আগে শহরের অনেক হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু হলেও স্বাস্থ্য বিভাগ কী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘সব ঘটনায়ই আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি।’ 

পাবনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সি বলেন, ‘খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। নিহতের স্বজনদের লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত