Ajker Patrika

বড় ভাইকে ভোট দিতে গিয়ে প্রাণ গেল ছোট ভাইয়ের

পাবনা প্রতিনিধি
বড় ভাইকে ভোট দিতে গিয়ে প্রাণ গেল ছোট ভাইয়ের

পাবনার সুজানগর উপজেলার মেম্বার প্রার্থী বড় ভাইকে ভোট দিতে গিয়ে ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন ছোট ভাই। গত সোমবার নিজ বাড়ি চলনা কারিগরপাড়ার সামনে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় প্রতিপক্ষের দুর্বৃত্তরা। গতকাল মঙ্গলবার রাতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সবুজ হোসেন। 

জানা যায়, ভায়না ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার পদপ্রার্থী আনোয়ার হোসেনকে ভোট দিতে এলাকায় আসেন সবুজ হোসেন। ঢাকা থেকে এলাকায় আসার ৬ ঘণ্টার মাথায় দুর্বৃত্তদের আক্রমণের শিকার হন সবুজ। সবুজ ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন এবং স্ত্রী ও মেয়ে নিয়ে ঢাকাতেই থাকেন। 

এ ঘটনার প্রতিবাদে ও হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টায় বিক্ষোভ মিছিল, প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন এলাকাবাসী ও নানা শ্রেণি পেশার মানুষ। 

নিহত সবুজের বড় ভাই আনোয়ার হোসেন বলেন, তিনি নিজ এলাকার ওয়ার্ডের মেম্বার পদপ্রার্থী। এ ছাড়াও তাঁর অনুসারীরা স্বতন্ত্র আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) ওমর ফারুকের নির্বাচন করায় নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আমিন উদ্দিনের সঙ্গে বিরোধ দেখা দেয়। এ নিয়ে নৌকার অনুসারী ও সন্ত্রাসী বাহিনী হুমকি ধামকি অব্যাহত রাখে। গত সোমবার সন্ধ্যায় নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর সশস্ত্র বাহিনী চলনা বাজারে আনারস প্রতীকের অফিস, বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুর করে। যাওয়ার সময়ে তাঁর বাড়ি সামনে সবুজকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান তাঁরা। 

প্রতিবেশী আমিনুর রহমান, শিপুল হোসেন ও মোর্শেদ আলম জানান, বড় ভাই আনোয়ার হোসেনকে ভোট দেওয়ার জন্য সবুজ ৬ ঘণ্টা আগে স্ত্রী, ও মেয়েসহ গ্রামের বাড়ি আসেন। এ হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেয়ে যায় না। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই। 

আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী ওমর ফারুক বলেন, আমিন উদ্দিন নৌকা প্রতীক নিয়ে আসলেও তিনি এলাকায় গ্রহণযোগ্য নন। নিজের পরাজয় জেনে একের পর এক হামলা, ভাঙচুর ও সংঘাত সৃষ্টি করে নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করার ষড়যন্ত্র করছেন।  

তিনি বলেন, আমরা আগামীকাল ১১ নভেম্বর ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে কেন্দ্রে গিয়ে নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন এ দাবি রাখছি নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে। 

আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আমিন উদ্দিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, হামলার ঘটনার সঙ্গে নৌকার সমর্থকেরা জড়িত নয়। উল্টো তারাই আমার প্রচার বহরে হামলা চালিয়ে কয়েকজনকে আহত করেছে। যিনি মারা গেছেন তিনি এক সময়ে আমার কর্মী ছিলেন। এখন তাঁরা ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে। 

সুজানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, নির্বাচনী সহিংসতার ঘটনায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে অজ্ঞাত ৫০ জনের নামে। ওই ঘটনায় সবুজ নামে এক যুবক মারা যাওয়ায় মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তর হয়েছে। আজ বুধবার দুপুর পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। তবে আসামি ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান ওসি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত