কোম্পানীগঞ্জে চলছে হরতাল, পুলিশের মামলায় দেড় শ আসামি

কোম্পানীগঞ্জ (নোয়াখালী) : নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের ওপর হামলার প্রতিবাদে আওয়ামী লীগের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার হরতাল চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে উপজেলায় তিন শতাধিক অতিরিক্ত পুলিশ ও র‌্যাব মোতায়েন করা হয়েছে।

আজ রোববার ভোর ৬টার দিকে বসুরহাট নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া বসুরহাট এক্সপ্রেসের একটি বাস ভাঙচুর করে পিকেটাররা। এ সময় আহত হন গাড়ির চালক, সুপারভাইজার ও হেলপার। বসুরহাট-ঢাকা, বসুরহাট-চট্টগ্রাম, ফেনী-বসুরহাট-কবিরহাটসহ সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। বসুরহাট বাজারে সীমিত আকারে অটোরিকশা চলাচল করলেও উপজেলার সব হাটবাজারের দোকানপাট বন্ধ রয়েছে।

এদিকে সকাল থেকে উপজেলার চরএলাহী, বাংলাবাজার, চরফকিরা, রামপুর, চরপার্বতী, চরহাজারী, সিরাজপুর, চাপরাশিরহাট, মুছাপুর ও বসুরহাটের বিভিন্ন সড়কে গাছের গুঁড়ি, ইট ও টায়ারে আগুন দিয়ে সড়ক অবরোধ করে পিকেটিং করে বাদল সমর্থকেরা। উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ ও র‌্যাব অবস্থান নিয়েছে। র‌্যাব, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সড়কগুলোতে টহল দিচ্ছেন এবং সড়কে ফেলে রাখা গাছের গুঁড়িসহ প্রতিবন্ধকতা তুলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছেন। পুলিশ চলে যাওয়ার পর পিকেটাররা আবারও সড়ক বন্ধ করে যান চলাচল বন্ধ করে দিচ্ছে।

কোম্পানীগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ বলেন, শনিবার দুপুরে টেকেরবাজার এলাকায় পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে চার পুলিশ সদস্যকে আহত করেছে বিক্ষোভকারীরা। এ ঘটনায় কোম্পানীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক নিজাম উদ্দিন বাদী হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ১০০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন। বর্তমানে উপজেলার পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

প্রসঙ্গত, শনিবার সকাল ৯টার দিকে বসুরহাট বাজারে প্রধান সড়কের ইসলামী ব্যাংকের সামনে মেয়র আবদুল কাদের মির্জার সমর্থকরা প্রতিপক্ষ সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের ওপর হামলা চালিয়ে তাঁকে জখম করে। ঘটনার প্রতিবাদে উপজেলা আওয়ামী লীগের মুখপাত্র মাহবুব রশিদ মঞ্জু ৪৮ ঘণ্টা হরতালের ডাক এবং বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করে বাদলের সমর্থকরা। দুপুরে টেকের বাজারে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করার সময় পুলিশ বাধা দেয়। এতে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আন্দোলনকারীদের ইটের আঘাতে ৪ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়। পরে আত্মরক্ষার্থে পুলিশ ৩৩ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফখরুল ইসলাম সবুজ (৫৫) ও তাঁর ছেলে তরিকুল ইসলাম চয়নসহ (১৮) তিনজন গুলিবিদ্ধসহ বেশ কয়েকজন আহত হন।