নেত্রকোনা প্রতিনিধি
সংস্কৃতিকর্মী সুব্রত রায় টিটো নিজের বুকে, মুখে ও পায়ে হাত দিয়ে বলেন, ‘শরীরের এসব জায়গায় স্প্লিন্টার ছিল। চিকিৎসকেরা বলেছেন, বুকের স্প্লিন্টারটি আরেকটু গভীরে গেলেই আমি স্পট ডেথ হতাম।' এরপর কানে আলতো স্পর্শ লাগিয়ে বলেন, `দুই কানেই শুনি না। তবে ডান কানটিতে একদমই না। অনেক মনোযোগ দিয়ে শুনতে হয়।’
আজ ৮ ডিসেম্বর নেত্রকোনায় জমিয়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) বোমা হামলা ট্র্যাজেডি দিবস। ২০০৫ সালের এই দিনে নেত্রকোনায় উদীচী কার্যালয়ে বোমা হামলার ঘটনা আহত হন সুব্রত রায় টিটো। জেলা উদীচী কার্যালয়ে তবলায় সংগত করার সময় কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
সুব্রত রায় টিটো বলেন, ‘প্রথম বোমাটি বিস্ফোরণের পর বিকট শব্দে আরেকটি বোমা বিস্ফোরিত হয়। আমার মনে হচ্ছিল আমি যেন বাতাসের সঙ্গে উড়ে চলে গেছি। এরপর অনেক ওপর থেকে নিচে নেমে এসেছি। অবচেতন মনে ভাবছিলাম, আমি মৃত্যুকে আলিঙ্গন করছি।’
ঘটনার দিনের বর্ণনা দিয়ে সুব্রত রায় বলেন, ‘প্রথম বোমাটি ফেটে যাওয়ার পর উদীচীর সামনের গাছটার নিচে আমরা সবাই জড়ো হই। হঠাৎ করে আরেকটি বোমা বিকট শব্দে ফাটে। আমি সেন্স হারিয়ে ফেলি। কিছুই বলতে পারি না। পরে শুনেছি, আমি মৃতদের মধ্যে পড়ে ছিলাম। আমাকে মন্টি দা নামের এক বড় ভাই এসে তুলেছেন। আমার কান দিয়ে রক্ত পড়ছিল। মন্টি দা আমাকে কোনো রকমে নেত্রকোনা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে নেওয়ার পর আমার সেন্স ফিরে এসেছে। আমি তখন হাসপাতালের রোগী নেওয়ার ট্রলির নিচে নোংরা আর রক্তের মধ্যে পড়ে ছিলাম। তারপর দেখি হায়দার ভাই মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন। এরপর বোধ হয় চার থেকে পাঁচ মিনিট সেন্স ছিল। পরে আমাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে ময়মনসিংহ হাসপাতালে আমার শরীর থেকে স্প্লিন্টার বের করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এর পরে আরেক বিপদ ঘটল। দুই দিন থাকার পর আমাদের রিলিজ দিয়ে দেওয়া হবে। চিকিৎসকদের কাছে একটি উড়ো চিঠি এসেছে। আমাদের এখানে চিকিৎসা দেওয়া হলে মেডিকেল উড়িয়ে দেওয়া হবে। তখনো আমাদের শরীরের ক্ষতগুলো কাঁচা ছিল। দাঁড়াতে পারছি না। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের চাপে আমাদের রাখতে বাধ্য হয়। এখান থেকে রিলিজ দেওয়ার পর ডা. প্রাণ গোপালের কাছে কানের চিকিৎসা নিই। তবে তিনি বলেছেন, অপারেশন করলেও আমার কান কোনো দিন ভালো হবে না। আমি ডান কানে শুনি না বললেই চলে।’
বোমা হামলার পর সংগঠন ও ব্যক্তিগতভাবে মানুষের সহযোগিতা পেলেও রাষ্ট্রীয় কোনো কিছু পাননি তিনি। আক্ষেপ করে সুব্রত রায় বলেন, ‘আমরা উদীচী করি। বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে আহত হয়েছি। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি এত দিন ক্ষমতায় থাকার পরেও কেউ আমাদের কোনো খবর নেয়নি।’
সেদিনের বোমা বিস্ফোরণে আহত উদীচীর সহসভাপতি তুষার কান্তি রায় বলেন, ‘বোমা বিস্ফোরণের চার থেকে পাঁচ হাতের মধ্যেই আমি ছিলাম। আমি ধোঁয়ার কারণে তাকাতে পারছিলাম না। মুখে হাত দিই যখন, তখন দেখি প্রচণ্ড জ্বালাপোড়া। তখন আমি পাশের বড় পুকুরে ঝাঁপিয়ে পড়ি। তখন পাশের বিনাপাণী স্কুলের কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষিকা আমাকে পুকুর থেকে তোলেন। আমার শরীরে কোনো স্প্লিন্টার লাগেনি। তবে আমার জামা ও প্যান্ট ঝাজরা হয়ে পড়েছিল। কিন্তু আমি কানে শুনতাম না। চোখেও কম দেখি। তবে সবচেয়ে বড় বেশি বিপদে পড়ি এ ঘটনার পর। গোয়েন্দা শাখার লোকজন আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। যেটা একবারে হেনস্তার মধ্যে পড়ে। তাদের প্রশ্নে মনে হচ্ছিল আমার সহকর্মীরা মরল, গুরুতর আহত হলো, আমি কেন মরলাম না!’
উল্লেখ্য, জমিয়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) ২০০৫ সালের ৮ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নেত্রকোনা জেলা শহরের অজহর রোডের উদীচী কার্যালয়ের সামনে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালায়। হামলায় আত্মঘাতী কিশোরসহ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক খাজা হায়দার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক সুদীপ্তা পাল শেলী, মোটর মেকানিকস যাদব দাসসহ আটজন নিহত এবং অন্তত ৫০ জন আহত হন।
সংস্কৃতিকর্মী সুব্রত রায় টিটো নিজের বুকে, মুখে ও পায়ে হাত দিয়ে বলেন, ‘শরীরের এসব জায়গায় স্প্লিন্টার ছিল। চিকিৎসকেরা বলেছেন, বুকের স্প্লিন্টারটি আরেকটু গভীরে গেলেই আমি স্পট ডেথ হতাম।' এরপর কানে আলতো স্পর্শ লাগিয়ে বলেন, `দুই কানেই শুনি না। তবে ডান কানটিতে একদমই না। অনেক মনোযোগ দিয়ে শুনতে হয়।’
আজ ৮ ডিসেম্বর নেত্রকোনায় জমিয়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) বোমা হামলা ট্র্যাজেডি দিবস। ২০০৫ সালের এই দিনে নেত্রকোনায় উদীচী কার্যালয়ে বোমা হামলার ঘটনা আহত হন সুব্রত রায় টিটো। জেলা উদীচী কার্যালয়ে তবলায় সংগত করার সময় কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
সুব্রত রায় টিটো বলেন, ‘প্রথম বোমাটি বিস্ফোরণের পর বিকট শব্দে আরেকটি বোমা বিস্ফোরিত হয়। আমার মনে হচ্ছিল আমি যেন বাতাসের সঙ্গে উড়ে চলে গেছি। এরপর অনেক ওপর থেকে নিচে নেমে এসেছি। অবচেতন মনে ভাবছিলাম, আমি মৃত্যুকে আলিঙ্গন করছি।’
ঘটনার দিনের বর্ণনা দিয়ে সুব্রত রায় বলেন, ‘প্রথম বোমাটি ফেটে যাওয়ার পর উদীচীর সামনের গাছটার নিচে আমরা সবাই জড়ো হই। হঠাৎ করে আরেকটি বোমা বিকট শব্দে ফাটে। আমি সেন্স হারিয়ে ফেলি। কিছুই বলতে পারি না। পরে শুনেছি, আমি মৃতদের মধ্যে পড়ে ছিলাম। আমাকে মন্টি দা নামের এক বড় ভাই এসে তুলেছেন। আমার কান দিয়ে রক্ত পড়ছিল। মন্টি দা আমাকে কোনো রকমে নেত্রকোনা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে নেওয়ার পর আমার সেন্স ফিরে এসেছে। আমি তখন হাসপাতালের রোগী নেওয়ার ট্রলির নিচে নোংরা আর রক্তের মধ্যে পড়ে ছিলাম। তারপর দেখি হায়দার ভাই মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন। এরপর বোধ হয় চার থেকে পাঁচ মিনিট সেন্স ছিল। পরে আমাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে ময়মনসিংহ হাসপাতালে আমার শরীর থেকে স্প্লিন্টার বের করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এর পরে আরেক বিপদ ঘটল। দুই দিন থাকার পর আমাদের রিলিজ দিয়ে দেওয়া হবে। চিকিৎসকদের কাছে একটি উড়ো চিঠি এসেছে। আমাদের এখানে চিকিৎসা দেওয়া হলে মেডিকেল উড়িয়ে দেওয়া হবে। তখনো আমাদের শরীরের ক্ষতগুলো কাঁচা ছিল। দাঁড়াতে পারছি না। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের চাপে আমাদের রাখতে বাধ্য হয়। এখান থেকে রিলিজ দেওয়ার পর ডা. প্রাণ গোপালের কাছে কানের চিকিৎসা নিই। তবে তিনি বলেছেন, অপারেশন করলেও আমার কান কোনো দিন ভালো হবে না। আমি ডান কানে শুনি না বললেই চলে।’
বোমা হামলার পর সংগঠন ও ব্যক্তিগতভাবে মানুষের সহযোগিতা পেলেও রাষ্ট্রীয় কোনো কিছু পাননি তিনি। আক্ষেপ করে সুব্রত রায় বলেন, ‘আমরা উদীচী করি। বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে আহত হয়েছি। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি এত দিন ক্ষমতায় থাকার পরেও কেউ আমাদের কোনো খবর নেয়নি।’
সেদিনের বোমা বিস্ফোরণে আহত উদীচীর সহসভাপতি তুষার কান্তি রায় বলেন, ‘বোমা বিস্ফোরণের চার থেকে পাঁচ হাতের মধ্যেই আমি ছিলাম। আমি ধোঁয়ার কারণে তাকাতে পারছিলাম না। মুখে হাত দিই যখন, তখন দেখি প্রচণ্ড জ্বালাপোড়া। তখন আমি পাশের বড় পুকুরে ঝাঁপিয়ে পড়ি। তখন পাশের বিনাপাণী স্কুলের কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষিকা আমাকে পুকুর থেকে তোলেন। আমার শরীরে কোনো স্প্লিন্টার লাগেনি। তবে আমার জামা ও প্যান্ট ঝাজরা হয়ে পড়েছিল। কিন্তু আমি কানে শুনতাম না। চোখেও কম দেখি। তবে সবচেয়ে বড় বেশি বিপদে পড়ি এ ঘটনার পর। গোয়েন্দা শাখার লোকজন আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। যেটা একবারে হেনস্তার মধ্যে পড়ে। তাদের প্রশ্নে মনে হচ্ছিল আমার সহকর্মীরা মরল, গুরুতর আহত হলো, আমি কেন মরলাম না!’
উল্লেখ্য, জমিয়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) ২০০৫ সালের ৮ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নেত্রকোনা জেলা শহরের অজহর রোডের উদীচী কার্যালয়ের সামনে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালায়। হামলায় আত্মঘাতী কিশোরসহ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক খাজা হায়দার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক সুদীপ্তা পাল শেলী, মোটর মেকানিকস যাদব দাসসহ আটজন নিহত এবং অন্তত ৫০ জন আহত হন।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপির) উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করেছেন বিএনপি নেতা। সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যায় বিএনপিকে জড়িয়ে অপপ্রচার করার অভিযোগে গাজীপুর আদালতে এ মামলা করেছেন তিনি।
১২ আগস্ট ২০২৫লক্ষ্মীপুরে রামগতিতে নৌকায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ ফারুক হোসেন (৪০) নামে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন দুজন। এখনো চিকিৎসাধীন অবস্থায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন আরও দুজন। আজ মঙ্গলবার ভোরে জাতীয় বার্ন প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফারুক হোসেন মারা যান।
১২ আগস্ট ২০২৫দুই বছর আগে ফেনী পৌরসভার সুমাইয়া হোসেন আনিকা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উদ্যোগে ফ্রিল্যান্সিং ও গ্রাফিক ডিজাইনের প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। এরপর বিভিন্ন অনলাইন প্রতিষ্ঠানে চাকরির চেষ্টা করেও সফল হননি। এখন স্বামীর অনলাইন ব্যবসা দেখাশোনা করছেন। আনিকা বলেন, ‘প্রশিক্ষণ পেয়েছি, কিন্তু কাজের সুযোগ খুবই কম।’ আনিকার
১২ আগস্ট ২০২৫চট্টগ্রাম বন্দরে আন্দোলন দমাতে টাকা দাবির ভিডিও ভাইরালের পর এবার জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) চট্টগ্রাম নগরের যুগ্ম সমন্বয়কারী নিজাম উদ্দিনকে কেন্দ্র থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁকে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না তাঁর লিখিত ব্যাখা আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দলকে জানানো কথা বলা হয়েছে।
১২ আগস্ট ২০২৫