Ajker Patrika

রোগীর মৃত্যুর পর গা ঢাকা দিয়েছেন পল্লি চিকিৎসক

প্রতিনিধি
রোগীর মৃত্যুর পর গা ঢাকা দিয়েছেন পল্লি চিকিৎসক

মোহনগঞ্জ (নেত্রকোনা): খালিয়াজুরীতে ভুল চিকিৎসায় মো. মহসিন মিয়া (৪০) নামে এক দিনমজুরের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পরপরই ওই দিনমজুরকে চিকিৎসা দেওয়া পল্লি চিকিৎসক গা ঢাকা দিয়েছেন।

গতকাল রোববার দিবাগত রাত ১২টার দিকে তিনি মারা যান। পরে পুলিশ ওই দিনমজুরের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

মহসিন উপজেলার পাঁচহাট গ্রামের মো. মোক্তার আলী ছেলে। আর ওই পল্লি চিকিৎসক একই গ্রামের মো. তোফাজ্জল হোসেন। তিনি গ্রামের বাজারে তারেক মেডিকেল হল নামে একটি ওষুধের দোকান চালান।

মহসিন মিয়ার স্ত্রী আমেনা আক্তার অভিযোগ করেন, মহসিন অন্যের জমিতে কাজ করে ছয় সন্তানসহ আটজনের সংসার চালাতেন। কিছুদিন ধরে তাঁর শরীর দুর্বল লাগছিল। এ কারণে রোববার সন্ধ্যায় চিকিৎসার জন্যে পল্লি চিকিৎসক তোফাজ্জল হোসেনের কাছে যান। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে কিছু ওষুধ দেন। সেগুলো ভিটামিন বলে দাবি করেন তিনি। পরে রাত ৮টার দিকে বাড়িতে এসে একটি স্যালাইন ও দুটি ইনজেকশন দেন।

স্যালাইন শেষ হওয়ার পর মহসিনের শারীরিক অবস্থায় অবনতি হতে থাকে। ছটফট করতে থাকেন। একপর্যায়ে যৌনাঙ্গ ও পায়ুপথ দিয়ে রক্ত বের হতে শুরু করে। রাত ১২টার দিকে তিনি মারা যান।


মহসিন মিয়ার প্রতিবেশী মো. রাজন মিয়া বলেন, ‘তরতাজা মানুষটাকে উল্টাপাল্টা ওষুধ দিয়া মেরে ফেলেছে। ঘটনার পর থেকে পল্লি চিকিৎসকের দোকানটা বন্ধ আছে। সে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। এর বিচার হওয়া দরকার। যেন আর কেউ তার ভুল চিকিৎসায় না মরে।’

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ঘটনার পর থেকেই পল্লি চিকিৎসক তোফাজ্জলের সেলফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এলাকার কোথাও তাঁর হদিস মিলছে না।

তবে পরিবারের এক সদস্যের নম্বরে কল করলে চিকিৎসক তোফাজ্জলকে পাওয়া যায়। অজ্ঞাত স্থান থেকে তিনি বলেন, ‘আমার চিকিৎসা ঠিকই আছে। কোনো ভুল চিকিৎসা হয়নি। রাতে তাঁকে ডেক্সটোজ ১০০০ এমএল স্যালাইন দেই। মিনিটে ৬০ ফোঁটা করে। তা ছাড়া বি-প্লেক্স-১০ এমএল ও ক্যালসিয়াম-৫ এমএল ইনজেকশন দেই। পরে কেন সে মারা গেছে তা আমি জানি না।’

খালিয়াজুরীর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আতাউর গনি ওসমানী বলেন, মহসিনকে যে ইনজেকশন এবং স্যালাইন পুশ করার কথা বলা হচ্ছে তাতে তার মৃত্যু হওয়ার কথা নয়। তবে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বা দ্রুত স্যালাইন গেলে মৃত্যু হতে পারে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখলে জানা যাবে।

পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। মহসিন মিয়ার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর হয়েছে। খালিয়াজুরী থানার ওসি মো. মজিবুর রহমান বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দিলে মামলা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে আইনগত সব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান ওসি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত