ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হওয়া অগ্নিকাণ্ডকে দুর্ঘটনা বলা যায় না। এটি একটি হত্যাকাণ্ড। অধিক মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে কারখানায় সরকারি নীতিমালা উপেক্ষা করে শিশু শ্রমিকদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যা অত্যন্ত বিবেকহীন কাজ।
অগ্নিকাণ্ডের পর কারখানা মালিক বলেছেন, ‘আগুন লাগার দায় কি আমার?’ আমার প্রশ্ন হলো—তাহলে দায়টা কার? একটা কারখানা তালা বন্ধ থাকে কীভাবে? কারখানা করার জন্য মালিক কোটি কোটি টাকা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছে, ইনস্যুরেন্সের ক্ষতিপূরণও তারা নেবে। তো এই দায় তিনি নেবেন না, কে নেবেন? মালিকই তো দায় নেবেন।
আমাদের শ্রমমন্ত্রী তো শ্রমিকবান্ধব। তিনি খুলনাতে শ্রমিক নেতা ছিলেন। তিনি কীভাবে তড়িঘড়ি করে একটা ২ লাখ এবং অন্যটা ৫০ হাজার টাকার ক্ষতিপূরণ ঘোষণা দিয়েছেন। জীবনের মূল্য কি টাকা দিয়ে হয়? আইএলওর কনভেনশন ১২১ অনুযায়ী, অন্ততপক্ষে সারা জীবনের আয়ের সমপরিমাণ অর্থ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। অর্থাৎ, একজন শ্রমিকের বয়স যদি ২৫ বছর হয়, তাহলে আয়ুষ্কাল ৬০ বছর ধরে তাঁর ভবিষ্যতের ৩৫ বছরের সম্ভাব্য আয়ের সমপরিমাণ অর্থ ক্ষতিপূরণ দিয়ে একটি সান্ত্বনা ও স্বাবলম্বিতা প্রক্রিয়া নিতে পারত। ১৫ থেকে ২০ বছর আগে ক্ষতিপূরণ হিসেবে যে ১ লাখ টাকা দেওয়া হতো, এখন সেটা শুধু দ্বিগুণ কীভাবে হয়? সবকিছুরই দাম কয়েকগুণ বেড়েছে। সুতরাং এই ইনক্রিশন অপ্রতুল ও অগ্রহণযোগ্য।
পুরো আয়ের সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ নীতিমালা বাস্তবায়ন হলে মালিক ও শ্রমিক উভয়ের সুযোগ হতো। কারণ, প্রতি বছর ঘটনা ধরে ধরে আমাদের আন্দোলন করতে হতো, শ্রমিকেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে রাস্তায় নামলে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকত। সমগ্র আয়ের সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ নীতি বাস্তবায়ন হলে মালিকদেরও লাভ হতো। আর ক্ষতিপূরণের যে বিধান রয়েছে, সেটা অনেক জটিল। আমরা চাই ইমিডিয়েট যারা উত্তরাধিকারী, তাদের এটা দিতে হবে এবং প্রক্রিয়াটি অনেক তাড়াতাড়ি সম্পন্ন হতে হবে। পাশাপাশি, ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য সময় নির্ধারণ করে সেই সময়ের মধ্যে ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত না করলে শাস্তির বিধান রাখতে হবে।
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন কর্তৃপক্ষ দেখবে বিল্ডিং কোড অনুযায়ী ভবন তৈরি হয়েছে কি না। এ ক্ষেত্রে একটি ভবন থেকে আরেকটি ভবনের যে দূরত্ব রাখা উচিত, তা মানা হয়েছে কি না, বিদ্যুৎ পরিকল্পনা ঠিক আছে কি না, চিকিৎসা ব্যবস্থা আছে কি না ইত্যাদি বিষয় দেখতে হবে। যদি না মেনে থাকে, তার জন্যও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। কিন্তু সমস্যা হলো, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর কিছু সুবিধা আদায়ের বিনিময়ে একটি প্রতিবেদন দিয়ে দেয়।
একসময়, এমনকি এখনো কারখানার মালিকেরা বাড়ির জন্য নির্মিত ভবনে গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠা করেন। তো গার্মেন্টস করার ফলে এখানে প্রতি ফ্লোরে যদি এক হাজার লোক কাজ করেন, তবে তাঁদের ওজন ও মেশিনের যে কম্পন, তাতে যেকোনো সময় ভবন ধসে যেতে পারে, যা সম্পূর্ণ অন্যায় এবং সেই সূত্রে হত্যাকাণ্ড।
রূপগঞ্জের অগ্নিকাণ্ডে শ্রমিকদের একটি ভবনে আবদ্ধ রেখে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। কে কার ভাই, সন্তান সেটাও চিহ্নিত করা যায়নি। এই অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ সরকার নয়, বরং কারখানার মালিককেই দিতে হবে। সর্বোপরি বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে রূপগঞ্জের এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান: সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র
অনুলিখন: রবিউল আলম
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হওয়া অগ্নিকাণ্ডকে দুর্ঘটনা বলা যায় না। এটি একটি হত্যাকাণ্ড। অধিক মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে কারখানায় সরকারি নীতিমালা উপেক্ষা করে শিশু শ্রমিকদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যা অত্যন্ত বিবেকহীন কাজ।
অগ্নিকাণ্ডের পর কারখানা মালিক বলেছেন, ‘আগুন লাগার দায় কি আমার?’ আমার প্রশ্ন হলো—তাহলে দায়টা কার? একটা কারখানা তালা বন্ধ থাকে কীভাবে? কারখানা করার জন্য মালিক কোটি কোটি টাকা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছে, ইনস্যুরেন্সের ক্ষতিপূরণও তারা নেবে। তো এই দায় তিনি নেবেন না, কে নেবেন? মালিকই তো দায় নেবেন।
আমাদের শ্রমমন্ত্রী তো শ্রমিকবান্ধব। তিনি খুলনাতে শ্রমিক নেতা ছিলেন। তিনি কীভাবে তড়িঘড়ি করে একটা ২ লাখ এবং অন্যটা ৫০ হাজার টাকার ক্ষতিপূরণ ঘোষণা দিয়েছেন। জীবনের মূল্য কি টাকা দিয়ে হয়? আইএলওর কনভেনশন ১২১ অনুযায়ী, অন্ততপক্ষে সারা জীবনের আয়ের সমপরিমাণ অর্থ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। অর্থাৎ, একজন শ্রমিকের বয়স যদি ২৫ বছর হয়, তাহলে আয়ুষ্কাল ৬০ বছর ধরে তাঁর ভবিষ্যতের ৩৫ বছরের সম্ভাব্য আয়ের সমপরিমাণ অর্থ ক্ষতিপূরণ দিয়ে একটি সান্ত্বনা ও স্বাবলম্বিতা প্রক্রিয়া নিতে পারত। ১৫ থেকে ২০ বছর আগে ক্ষতিপূরণ হিসেবে যে ১ লাখ টাকা দেওয়া হতো, এখন সেটা শুধু দ্বিগুণ কীভাবে হয়? সবকিছুরই দাম কয়েকগুণ বেড়েছে। সুতরাং এই ইনক্রিশন অপ্রতুল ও অগ্রহণযোগ্য।
পুরো আয়ের সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ নীতিমালা বাস্তবায়ন হলে মালিক ও শ্রমিক উভয়ের সুযোগ হতো। কারণ, প্রতি বছর ঘটনা ধরে ধরে আমাদের আন্দোলন করতে হতো, শ্রমিকেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে রাস্তায় নামলে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকত। সমগ্র আয়ের সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ নীতি বাস্তবায়ন হলে মালিকদেরও লাভ হতো। আর ক্ষতিপূরণের যে বিধান রয়েছে, সেটা অনেক জটিল। আমরা চাই ইমিডিয়েট যারা উত্তরাধিকারী, তাদের এটা দিতে হবে এবং প্রক্রিয়াটি অনেক তাড়াতাড়ি সম্পন্ন হতে হবে। পাশাপাশি, ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য সময় নির্ধারণ করে সেই সময়ের মধ্যে ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত না করলে শাস্তির বিধান রাখতে হবে।
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন কর্তৃপক্ষ দেখবে বিল্ডিং কোড অনুযায়ী ভবন তৈরি হয়েছে কি না। এ ক্ষেত্রে একটি ভবন থেকে আরেকটি ভবনের যে দূরত্ব রাখা উচিত, তা মানা হয়েছে কি না, বিদ্যুৎ পরিকল্পনা ঠিক আছে কি না, চিকিৎসা ব্যবস্থা আছে কি না ইত্যাদি বিষয় দেখতে হবে। যদি না মেনে থাকে, তার জন্যও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। কিন্তু সমস্যা হলো, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর কিছু সুবিধা আদায়ের বিনিময়ে একটি প্রতিবেদন দিয়ে দেয়।
একসময়, এমনকি এখনো কারখানার মালিকেরা বাড়ির জন্য নির্মিত ভবনে গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠা করেন। তো গার্মেন্টস করার ফলে এখানে প্রতি ফ্লোরে যদি এক হাজার লোক কাজ করেন, তবে তাঁদের ওজন ও মেশিনের যে কম্পন, তাতে যেকোনো সময় ভবন ধসে যেতে পারে, যা সম্পূর্ণ অন্যায় এবং সেই সূত্রে হত্যাকাণ্ড।
রূপগঞ্জের অগ্নিকাণ্ডে শ্রমিকদের একটি ভবনে আবদ্ধ রেখে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। কে কার ভাই, সন্তান সেটাও চিহ্নিত করা যায়নি। এই অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ সরকার নয়, বরং কারখানার মালিককেই দিতে হবে। সর্বোপরি বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে রূপগঞ্জের এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান: সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র
অনুলিখন: রবিউল আলম
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপির) উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করেছেন বিএনপি নেতা। সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যায় বিএনপিকে জড়িয়ে অপপ্রচার করার অভিযোগে গাজীপুর আদালতে এ মামলা করেছেন তিনি।
২৫ দিন আগেলক্ষ্মীপুরে রামগতিতে নৌকায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ ফারুক হোসেন (৪০) নামে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন দুজন। এখনো চিকিৎসাধীন অবস্থায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন আরও দুজন। আজ মঙ্গলবার ভোরে জাতীয় বার্ন প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফারুক হোসেন মারা যান।
২৫ দিন আগেদুই বছর আগে ফেনী পৌরসভার সুমাইয়া হোসেন আনিকা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উদ্যোগে ফ্রিল্যান্সিং ও গ্রাফিক ডিজাইনের প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। এরপর বিভিন্ন অনলাইন প্রতিষ্ঠানে চাকরির চেষ্টা করেও সফল হননি। এখন স্বামীর অনলাইন ব্যবসা দেখাশোনা করছেন। আনিকা বলেন, ‘প্রশিক্ষণ পেয়েছি, কিন্তু কাজের সুযোগ খুবই কম।’ আনিকার
২৫ দিন আগেচট্টগ্রাম বন্দরে আন্দোলন দমাতে টাকা দাবির ভিডিও ভাইরালের পর এবার জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) চট্টগ্রাম নগরের যুগ্ম সমন্বয়কারী নিজাম উদ্দিনকে কেন্দ্র থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁকে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না তাঁর লিখিত ব্যাখা আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দলকে জানানো কথা বলা হয়েছে।
২৫ দিন আগে