Ajker Patrika

হাসপাতালে রাত আড়াইটায় গেল বিদ্যুৎ, জেনারেটর চালু হলো সকাল ৭টায়

প্রতিনিধি
আপডেট : ৩০ জুন ২০২১, ১৬: ১৯
হাসপাতালে রাত আড়াইটায় গেল বিদ্যুৎ, জেনারেটর চালু হলো সকাল ৭টায়

নওগাঁ (রাজশাহী): নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে বিদ্যুৎ বিভ্রাটে চরম ভোগান্তিতে রোগীরা। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত আড়াইটা থেকে আজ সকাল ৮টা ৪৪ মিনিট পর্যন্ত টানা বিদ্যুৎহীন ছিল নওগাঁ পৌরসভার ১,৬ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বেশ কিছু এলাকা। দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হয়। ভয়ংকর ঝুঁকিতে পড়েন গুরুতর কোভিড রোগীরা। 

আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, তখনো বিদ্যুৎ আসেনি। হাসপাতালের জেনারেটরও চালু করা হয়নি। বিদ্যুৎ না থাকায় হাসপাতালের নতুন ভবনের নিচ তলায় করোনা ইউনিট ও করোনার উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া ফ্লু ওয়ার্ডে তখনো আবছা অন্ধকার। তীব্র গরমে রোগীদের নাভিশ্বাস অবস্থা। রোগীর স্বজনেরা কেউ হাতপাখা, আবার কেউ কাপড় দিয়ে রোগীকে বাতাস দেওয়ার চেষ্টা করছেন। 

করোনা ইউনিটে ভর্তি রবিউল ইসলাম নামের এক রোগী বলেন, ‘গত রাত আড়াইটা থেকে হাসপাতালে বিদ্যুৎ নেই। আমার স্ত্রীসহ করোনা ইউনিটে ভর্তি থাকা বেশ কয়েকজন রোগী প্রচণ্ড শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। তাঁদের অক্সিজেন নেওয়ার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু বিদ্যুৎ না থাকায় অক্সিজেন নিতে পারেননি। বারবার বলার পরও হাসপাতালের জেনারেটর চালু করা হয়নি।’ 

তিনি বলেন, শুধু গত রাতেই এই সমস্যা নয়–ভর্তির পর থেকেই বিদ্যুতের আসা-যাওয়ার মধ্যে চলছে। এই গরমের মধ্যে এমন বিদ্যুৎ বিভ্রাটে রোগী কষ্ট বেড়েছে। 

হারুনুর রশীদ নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘আমার মা তিন দিন থেকে হাসপাতালে ভর্তি। এখানে বিদ্যুতের খুব সমস্যা। আজ রাতে তো চরম দুর্ভোগ হয়েছে। রাত আড়াইটার দিকে বিদ্যুৎ চলে গেছে, সকাল ৭টায় হাসপাতালের জেনারেটর চালু হয়েছে। বিদ্যুৎ না থাকায় কৃত্রিমভাবে মাকে অক্সিজেন দেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। জেনারেটর চালু হওয়ার পর সেন্ট্রাল অক্সিজেন সাপ্লাই চালু হয়।’ 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক সিভিল সার্জন এবিএম আবু হানিফ বলেন, ‘বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পর থেকেই ১৫০ কেভি ক্ষমতাসম্পন্ন হাসপাতালের নিজস্ব জেনারেটর চালু করার চেষ্টা করেন কর্তব্যরত অপারেটর। কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় তিনি তৎক্ষণাৎ জেনারেটর চালু করতে ব্যর্থ হন। ভোর রাতে টেকনিশিয়ান ডেকে এনে প্রায় দেড় ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে ত্রুটি সারিয়ে জেনারেটর চালু করা হয়।’ 

এদিকে বিদ্যুতের ঘন ঘন যাওয়া-আসার কারণে দুই সপ্তাহ ধরে নওগাঁ পৌরসভার বাসিন্দাদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান নেসকো লিমিটেড বলছে, লাইনে গোলযোগ ও উন্নয়নকাজের জন্য এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। 

নেসকো লিমিটেডের বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ নওগাঁ উত্তর অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনির হোসেন বলেন, ‘রাত আড়াইটার দিকে হাসপাতালসহ পৌরসভার বেশ কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পর থেকে সমস্যা খোঁজার চেষ্টা শুরু করা হয়। কিন্তু দীর্ঘ সময় খোঁজার পরেও কোনো ফল্ট খুঁজে পাচ্ছিল না কর্মীরা। সকাল ৮টার দিকে পৌরসভার কাঁঠালতলী এলাকায় তিন নম্বর ফিডারে ফল্ট ধরা পড়ে। পরে সেই ফল্ট সারিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করা সম্ভব হয়েছে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত