Ajker Patrika

ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে দাবি মেয়র অনুসারীদের, রায়ে ক্ষুব্ধ শুভ্রর পরিবার

আরিফ আহম্মেদ, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি 
আপডেট : ১০ অক্টোবর ২০২২, ১৬: ২৬
ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে দাবি মেয়র অনুসারীদের, রায়ে ক্ষুব্ধ শুভ্রর পরিবার

ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান শুভ্র হত্যা মামলার আজ (সোমবার) রায় ঘোষণা করেছেন দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের ৩ নম্বর আদালতে বিচারক মনির কামাল। 

এ রায়কে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই গৌরীপুরে নেওয়া হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সর্বোচ্চ সতর্কতা। পৌর শহরের মোড়ে মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনসহ র‍্যাবের টহল লক্ষ করা গেছে। 

এ মামলার অন্যতম আসামি ছিলেন গৌরীপুর পৌরসভায় একাধিকবার নির্বাচিত মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সৈয়দ রফিকুল ইসলাম ও তাঁর ছোট দুই ভাই সৈয়দ তৌফিকুল ইসলাম ও সৈয়দ মাজহারুল ইসলাম জুয়েল। রায়ে তাঁরা তিনজনই খালাস পেয়েছেন। এতে মেয়র অনুসারীরা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে বলে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে শুভ্রর পরিবার। 

রায়ে সাতজনের মৃত্যুদণ্ড, তিনজনের যাবজ্জীবন ও নয়জন খালাস পেয়েছেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন মইলাকান্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রিয়াদ উজ্জামান রিয়াদ, গৌরীপুর পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাকিব আহমেদ রেজা, উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য মোজাম্মেল হক, চৌকিদার খাইরুল ইসলাম, মাঈন উদ্দিন, রুহুল আমিন ও শরীফুল ইসলাম নাঈম। 

যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন মাসুদ পারভেজ কার্জন, ছাত্রদলের কর্মী শরীয়তউল্লাহ ওরফে সুমন ও যুবদলের কর্মী রাসেল মিয়া। মামলায় ১৯ আসামির মধ্যে বাকিদের খালাস দিয়েছেন আদালত। 

মেয়রের আত্মীয় উপজেলার ভাংনামারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নেজামুল হক বলেন, ‘রায়ে সত্যের জয় হয়েছে। আদালতের প্রতি আমাদের শতভাগ আস্থা ছিল, আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি।’ 

গৌরীপুর পৌর যুবলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান মিথুন বলেন, ‘মেয়রকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছিল। এ রায়ে সত্য ও জনতার জয় হয়েছে, আমরা খুশি।’ 

অপরদিকে নিহত মাসুদুর রহমান শুভ্রর বাবা ডা. সিদ্দিকুর রহমান (বাবুল) বলেন, ‘আমার ছেলেকে হত্যার প্রকৃত পরিকল্পনাকারীরা খালাস পেয়েছে, এ রায় মানি না। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।’ 

উল্লেখ্য, গৌরীপুর উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান শুভ্রকে ২০২০ সালের ১৭ অক্টোবর গৌরীপুর পৌর শহরের পানমহালে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। বিচার চেয়ে শুভ্রর ছোট ভাই আবিদুর রহমান প্রান্ত বাদী হয়ে গৌরীপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। 

পরবর্তী সময়ে মামলাটি ডিবিতে স্থানান্তর করা হয় ও ২০২১ সালের ৫ মে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ কামাল আকন্দ। 

প্রতিবেদনে চার্জশিটভুক্ত ১৪ জন ছাড়াও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অনুসন্ধানে আরও ৫ জনের সম্পৃক্ত পাওয়ায় ১৯ জনকে অভিযুক্ত করে এ প্রতিবেদন দেওয়া হয়। 

গৌরীপুর থানার ওসি খান আব্দুল হালিম সিদ্দিকী জানান, শুভ্র হত্যা মামলায় রায়কে কেন্দ্র করে শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনসহ বিশেষ সতর্ক হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত