Ajker Patrika

যৌনক্ষমতা হারানোর ক্ষোভে কবিরাজ বাবাকে হত্যা করেন ছেলে

লালমনিরহাট প্রতিনিধি
আপডেট : ০৩ জুন ২০২২, ১৪: ০০
যৌনক্ষমতা হারানোর ক্ষোভে কবিরাজ বাবাকে হত্যা করেন ছেলে

যৌনক্ষমতা হারানোর ক্ষোভে বাবাকে হত্যা করেন জাহাঙ্গীর আলম। দীর্ঘ চার বছরের তদন্তের পর এ হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে সিআইডি। গতকাল বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে এ ঘটনার বর্ণনা দেন জেলা অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইসমাইল হোসেন। 

গ্রেপ্তার জাহাঙ্গীর আলম কালীগঞ্জ উপজেলার অচিনতলা গ্রামের গোলাম হোসেনের ছেলে। 

সংবাদ সম্মেলনে জেলার (সিআইডির) অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইসমাইল বলেন, গ্রামে কবিরাজি করতেন জাহাঙ্গীর আলমের বাবা গোলাম হোসেন। ২০০৯ সালে ছেলে জাহাঙ্গীর আলমকেও যৌনক্ষমতার কবিরাজি ওষুধ দেন, যা সেবন করে জাহাঙ্গীর যৌনক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন। পরের বছর বিয়ের পর ছেলে জাহাঙ্গীর বিষয়টি বুঝতে পেরে বাবার ওপর ক্ষুব্ধ হন। যৌনক্ষমতা নষ্টের কারণে স্ত্রীর সঙ্গেও বনিবনা ছিল না তাঁর। বিবাদ-কলহ লেগেই থাকত তাঁদের সংসারে। জাহাঙ্গীরকে রেখে তাঁর স্ত্রী ঢাকায় পোশাক কারখানায় শ্রমিক হিসেবে চাকরি নেন। এতে কবিরাজ বাবার ওপর ক্ষোভ বেড়ে যায় ছেলে জাহাঙ্গীরের। তাঁর ধারণা কবিরাজ বাবাকে মেরে ফেললে পুনরায় যৌনক্ষমতা ফিরে পাবেন। সেই ধারণা থেকে বাবাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন জাহাঙ্গীর। 

সংবাদ সম্মেলনে সিআইডি কর্মকর্তা বলেন, ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই স্ত্রী ঢাকায় থাকায় এবং ওই দিন হালকা বৃষ্টি হওয়ায় রান্নাঘর থেকে দা নিয়ে বাবা গোলাম হোসেনকে কুপিয়ে জখম করেন ছেলে জাহাঙ্গীর। এরপর বাবার দেহ বাড়ির পাশে লুকিয়ে ফেলার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু এমন সময় বাবার গোঙানিতে বড় ভাই-ভাবি টের পেয়ে যান। পরক্ষণে সেখানেই তাঁর বাবার মৃত্যু হয়। পরদিন এ ঘটনায় কালীগঞ্জ থানায় নিহতের বড় ছেলে বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। 

পুলিশ সুপার ইসমাইল আরও বলেন, এ ঘটনার পর নিহতের বড় ছেলের দায়ের করা মামলায় তদন্তকাজ শুরু করলেও কোনো রহস্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। দীর্ঘ চার বছরে ছয়জন তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলাটির রহস্য উদ্ঘাটন করতে পারেননি। চলতি বছরের মার্চ মাসে সপ্তম তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব নেন সিআইডির উপপরিদর্শক জায়েদুল ইসলাম জাহিদ। দায়িত্ব নিয়ে এ মামলার সন্দিগ্ধ আসামি গোলাম হোসেনের দ্বিতীয় ছেলে জাহাঙ্গীর আলমকে গত ১০ এপ্রিল আটক করে আদালতে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। পরে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করলে সুকৌশলী জিজ্ঞাসাবাদে তাঁর বাবাকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। এ বিষয়ে জাহাঙ্গীর আলম ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত