Ajker Patrika

৭৪ বছর পর এসে আবার সুষ্ঠু ভোট দেখলাম

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
আপডেট : ২৮ নভেম্বর ২০২১, ১৯: ৪৬
৭৪ বছর পর এসে আবার সুষ্ঠু ভোট দেখলাম

‘আমার যত দূর মনে পড়ে ১১ বছর বয়সে একবার সুষ্ঠু ভোট দেখেছিলাম। সেবার দলে দলে মানুষ ভোটকেন্দ্রে যাচ্ছিল। কোনো রকম হাঙ্গামা বা মারামারি ছিল না। ৮৫ বছর বয়সে এসে আবার আজ সুষ্ঠু ভোট দেখলাম। এমন ভোট না হলে মানুষ খুশি হয় না। এবার শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দিতে পেরে খুশি।’ কথাগুলো বলছিলেন তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে কালীগঞ্জ উপজেলার ষাইটবাড়িয়া হুক্কুলহুদা আলিম মাদ্রাসা কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা বৃদ্ধ নুর আলী। 

আজ রোববার ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ ও কোটচাঁদপুরে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। সকাল থেকে শীত উপেক্ষা করে কুয়াশা ভেদ করে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোটাররা আসতে থাকে। তবে নারী ভোটারদের সংখ্যা ছিল চোখে পড়ার মতো । এ দুই উপজেলার ১৬ ইউনিয়নের ১৫৫ কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ভোটের আগেই ১০৫ কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করে প্রশাসন। সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণের লক্ষ্যে শনিবার দুপুর থেকেই কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোটের সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু হয়। 

ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক মুজিবর রহমান ও পুলিশ সুপার মুনতাসিরুল ইসলাম ভোটকেন্দ্রগুলো পরিদর্শন করেন। দুই উপজেলা ১৫৫ কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে ১০৫১ পুলিশ, ১১ প্লাটুন বিজিবি ও ২ হাজার ৬৩৫ আনসারসদস্য কাজ করেছে। এসব উপজেলায় সার্বক্ষণিক ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন ১২ জন। 

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার মালিয়াট ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চল রাঢ়িপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ৬ মাসের সন্তান কোলে নিয়ে জীবনের প্রথম ভোট দিতে এসেছিলে গৃহবধূ তানজিলা খাতুন। ভোট দিয়ে বের হয়ে জানান, জীবনের প্রথম ভোট দিতে পেরে খুশি। তিনি বলেন, ‘আমি একটু চিন্তিত ছিলাম ভোট দেওয়া নিয়ে। কারণ বিগত ভোটে মারামারি হতে দেখেছি কিন্তু আজ তেমন কোনো  পরিবেশ তৈরি হতে দেখা যায়নি। সকাল থেকে পাড়া-মহল্লার মা-চাচিরা লাইন বেঁধে ভোট দিতে আসা দেখে আমিও আমার সন্তানকে কোলে নিয়ে ভোট দিতে এসেছি।’ 

কালীগঞ্জ উপজেলা রাঢ়িপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিয়ে কেন্দ্রের পাশে অস্থায়ী খাবার দোকানে বসা পঞ্চাশোর্ধ্ব সবুর মিয়ার সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি বলেন, ‘এবারের নির্বাচন এত সুষ্ঠু হবে ভাবতেও পারিনি। অথচ গত কয়েকটি নির্বাচন আমরা হাঙ্গামা মারামারির ভয়ে কেন্দ্রে আসতেই পারিনি। কিন্তু এবারের পরিবেশ একেবারেই ভিন্ন। আমরা উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিতে বাড়ি ফিরেছি।’   

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত