Ajker Patrika

চিকিৎসক না হয়েও অপারেশন করেন মালিক, ক্লিনিক সিলগালা

চিকিৎসক না হয়েও অপারেশন করেন মালিক, ক্লিনিক সিলগালা

হালনাগাদ অনুমোদন, অ্যানেসথেসিয়া ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সেবিকা কিছুই নেই মনিরামপুরের মনোয়ারা ক্লিনিকের। অপারেশনের জন্য চিকিৎসকও নেই তাঁদের। আছে শুধু কয়েকটি বেড আর কয়েকজন স্টাফ। এই দিয়েই ক্লিনিক চালিয়ে যাচ্ছিলেন মালিক আব্দুল হাই। 

অবসরপ্রাপ্ত উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার হলেও সিজারের রোগী এলে নিজেই চিকিৎসক সাজেন আব্দুল হাই। করেন অপারেশনও। ১০ বেডের পুরোনো অনুমোদন থাকলেও ভেতরে বেড বসিয়েছেন ১৮টি। এভাবেই যশোরের মনিরামপুর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের মূল ফটকে দোতলা একটি ভবন ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন মনোয়ারা ক্লিনিক চালাচ্ছেন আব্দুল হাই। 

মঙ্গলবার দুপুরে মুমূর্ষু এক সিজারের রোগী আসে তাঁর ক্লিনিকে। তখন আব্দুল হাই নিজেই অপারেশন থিয়েটারে রোগীর সিজার করেন। ঠিক ওই মুহূর্তে খবর পেয়ে ক্লিনিকে হাজির হন যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন। হাতেনাতে ধরে ফেলেন আব্দুল হাইকে। এ সময় অপারেশন থিয়েটার সিলগালা করেন তিনি। 

বেডে অপারেশনের রোগী থাকায় ক্লিনিক খোলা রাখার জন্য সাত দিনের সময় দেন সিভিল সার্জন। সপ্তাহ পার হলে মনিরামপুর হাসপাতালের টিএইচও এবং আবাসিক মেডিকেল অফিসারকে ক্লিনিক সিলগালা করার নির্দেশনা দেন তিনি। 

অভিযানে অংশ নেওয়া মনিরামপুর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. অনুপ বসু এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ সময় মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শুভ্রা দেবনাথ, সিভিল সার্জন অফিসের চিকিৎসক রেহেনেওয়াজ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। 

ডা. অনুপ বলেন, মনোয়ারা ক্লিনিকে অ্যানেসথেসিয়া নেই। সার্বক্ষণিক ভর্তি রোগী দেখভালের জন্য কোনো চিকিৎসক নেই। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্সও নেই। পুরোনো কাগজপত্র দিয়ে ক্লিনিক চালানো হচ্ছিল। তা ছাড়া মালিক আব্দুল হাই এমবিবিএস ডাক্তার না হয়েও নিজে অপারেশন করেন। 
 
যশোরের মনিরামপুর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের মূল ফটকে দোতলা একটি ভবন ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলছে মনোয়ারা ক্লিনিকডা. বসু বলেন, রোকনুজ্জামান নামে একজনকে নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসক দেখানো হলেও সেই সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি ক্লিনিকের মালিক। নিজের স্ত্রী মনোয়ারা বেগমকে তিনি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সেবিকা দাবি করেছেন। তাঁরও কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি তিনি। 

ডা. অনুপ বলেন, এসব কারণে মনোয়ারা ক্লিনিকের অপারেশন থিয়েটার (ওটি) সিলগালা করা হয়েছে। ভর্তি রোগী সরানোর জন্য সাত দিনের সময় দেওয়া হয়েছে। এরপর ক্লিনিক সিলগালা করা হবে। 

তবে ক্লিনিক মালিক আব্দুল হাই বলেন, অ্যানেসথেসিয়া বাইরে ছিলেন। এ সময় সিভিল সার্জন অভিযান চালান। তিনি ছয় দিনের জন্য ওটি বন্ধ রাখতে বলেছেন। 

এর আগে মনোয়ারা ক্লিনিকে সিজারের পর এক রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় জেল খেটেছেন মালিক আব্দুল হাই। তখনো তিনি নিজেই ওই রোগীর অপারেশন করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছিল। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত