Ajker Patrika

প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে বাবাকে হত্যা, ছেলেসহ গ্রেপ্তার ৪ 

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২২: ১৫
প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে বাবাকে হত্যা, ছেলেসহ গ্রেপ্তার ৪ 

গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার বৈষ্ণব দাস গ্রামে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে বৃদ্ধ বাবাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার দায়ে ছেলেসহ ৪ আসামিকে গাইবান্ধা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) গ্রেপ্তার করেছে। আজ মঙ্গলবার বাবাকে হত্যা ও আসামিদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানিয়েছে পিবিআই।

 পিবিআই পুলিশ সুপার এ এম আর এম আলিফ জানান, গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার বৈষ্ণব দাস গ্রামের সেকেন্দার আলী বাদশার ছেলে জাহিদুল ইসলামের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী পীরগঞ্জ উপজেলার কাশেমপুর গ্রামের মৃত জলিলের পুত্র রফিকুল ইসলামের জমিজমা এবং বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মামলা-মোকদ্দমা ও শত্রুতা চলছিল। প্রায়ই তাঁদের হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিলেন রফিকুল ইসলাম। ২০১৮ সালের ৪ মে সকালে হত্যাকাণ্ডের শিকার সেকেন্দার আলী আসামি জাহিদুল ইসলামের বাড়ির পাশে ধান দেখার জন্য যান। তখন বাদী জাহিদুলের প্রতিবেশী মামা জামাত আলী এগিয়ে গিয়ে দেখেন সেকেন্দার আলী বাঁশঝাড়ের ভেতরে মাটির ওপরে পড়ে আছেন। এ সময় জামাত আলী মণ্ডল বাড়ির লোকজনকে খবর দিলে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে সেকেন্দার আলীকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। পরে রংপুর নেওয়ার প্রস্তুতিকালে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় জাহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে সাদুল্যাপুর থানায় মামলা করেন। পরে আদালত মামলাটি পিবিআই পুলিশকে তদন্তের দায়িত্ব দেন। 

পুলিশ সুপার এ এম আর এম আলিফ আরও জানান, পিবিআই তদন্তকালে সেকেন্দার আলীকে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। পীরগঞ্জের কাশেমপুর গ্রামের রফিকুল ইসলামকে হত্যার আসামি করার জন্য জাহিদুল প্রতিবেশী মামা জামাত আলী, আরও দুজনসহ ২০১৮ সালের ৩ মে তাঁর বাবাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। সেদিন রাতে সেকেন্দার আলী বাড়ির পাশে পুকুরপাড়ে একা বসে ছিলেন। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী আসামিরা সেখানে আসামি মোন্নাফ ও আজিজ সেকেন্দার আলীর মুখে ও গলায় গেঞ্জি পেঁচিয়ে চেপে ধরেন। পরে আসামিরা জামাত আলী ও ছেলে জাহেদুলের সহযোগিতায় পাজাকোলা করে পুকুর পাড় থেকে তাঁকে ইউনুছ আলীর বাঁশঝাড়ে নিয়ে যান। সেখানে সেকেন্দার আলীর নাক-মুখ চেপে ধরায় তিনি হাত-পা নড়াচড়া বন্ধ করে দেন। এ সময় তাঁর মৃত্যু হয়েছে ভেবে বাঁশঝাড়ের ভেতর একটি নালায় তাঁকে ফেলে চলে যান আসামিরা। পরদিন ৪ মে বিকেলে আসামি জামাত আলী মরদেহ দেখতে গিয়ে জীবিত অবস্থায় দেখতে পান সেকেন্দার আলীকে। এ সময় সেখানে ১৮ বছর বয়সী লিমন মিয়া নামে একজন সেকেন্দার আলীকে টানাহেঁচড়া করতে দেখে ফেলায় জামাত আলী ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করেন। পরে জামাত আলীসহ এলাকার লোকজন সেকেন্দার আলীকে বাড়িতে নিয়ে গেলে সেখানে মৃত্যু হয় তাঁর। 

পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, পিবিআই সদস্যরা ব্যাপক তদন্ত করে মামলার কথিত বাদী নিহত সেকেন্দারের ছেলে জাহিদুল ইসলাম, তাঁর মামা জামাত আলী মণ্ডল, আব্দুল আজিজ ও আব্দুল মোন্নাফকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত