Ajker Patrika

উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে নাগরিক সংগঠন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে নাগরিক সংগঠন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে বাংলাদেশ যে যোগ্যতা অর্জন করেছে তাতে সরকারের পাশাপাশি নাগরিক সংগঠন এবং বেসরকারি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে বলে জানিয়েছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

আজ বুধবার ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণ প্রক্রিয়ায় নাগরিক সংগঠনগুলোর ভূমিকা: সুযোগ এবং চ্যালেঞ্জসমূহ’ শীর্ষক নীতি সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এ কথা বলেন তিনি। সিপিডির পাশাপাশি মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, জাতিসংঘের উন্নয়ন সংস্থা ইউএনডিপি, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ও ওয়াটার এইডসহ বেশ কয়েকটি সংস্থা এ গবেষণায় সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করেছে। 

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, দারিদ্র্য বিমোচন, দলিত, চা শ্রমিক ও আদিবাসীদের উন্নয়ন, লিঙ্গবৈষম্য দূর করা, নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নের বিষয়টি আরও গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে হবে। এলডিসি উত্তরণে নাগরিক সমাজের ভূমিকা নিশ্চিত করতে প্রয়োজন পূর্ণাঙ্গ কৌশলপত্র প্রণয়ন জরুরি বলেও উল্লেখ করেন তিনি। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় সংসদের অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত কমিটির সভাপতি সংসদ সদস্য ড. মো. আব্দুস শহীদ বলেন, এ ধরনের সংলাপগুলোতে সরকারের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণের মাধ্যমে ত্রুটি-বিচ্যুতির জায়গাগুলো সংশোধন করে নিতে পারেন। উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন করায় দেশের ভাবমূর্তি উন্নত হবে, বৈদেশিক ঋণ পাওয়া সহজ হবে, বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে এবং বিশ্ব দরবারে দর কশাকশি করা বাংলাদেশের জন্য সহজ হবে। 

সভাপতির বক্তব্যে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, এলডিসি উত্তরণ বাংলাদেশের জন্য একটি মাইলফলক। এসডিজি প্ল্যাটফর্ম তাদের একটি লক্ষ ছিল এসডিজি গোল-সিক্সটিন মনিটরিং করা যেখানে মানবাধিকার, সুশাসন ও ন্যায় বিচারের কথা বলা হয়েছে। ছোট ছোট এনজিওগুলোর ফান্ডিং কমে গেছে। মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন ১২০টি ছোট ছোট সংস্থাগুলোর সঙ্গে তাঁর কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে। 

নিজেরা করি’র সমন্বয়ক খুশি কবির বলেন, সরকার নাগরিক সংগঠনগুলোকে প্রতিপক্ষ মনে করে। দেশের উন্নয়নে প্রত্যেক নাগরিকের ভূমিকা আছে যা স্বীকৃতি দিতে হবে এবং সকলকে উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। উন্নয়নের ধারা সকলের ক্ষেত্রে এক নয়, তাই নীতিমালার ক্ষেত্রে ভিন্নতাকে প্রাধান্য দিতে হবে। 

ইউনাইটেড নেশনস ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউএনডিপি) ’র কান্ট্রি ইকোনমিস্ট বাংলাদেশ ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, ২০২৬ এর পর একটি বড় চ্যালেঞ্জ হবে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা মোকাবিলা করা। যার জন্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের দক্ষতা বৃদ্ধিতে সরকারকেও অনুদান প্রদানের মাধ্যমে সহযোগিতা করতে হবে। 

একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির, দুর্যোগ এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার প্রতি আরও বেশি নজর দেওয়ার আহ্বান জানান। 

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, বাংলাদেশে উন্নয়ন হয়েছে, কিন্তু উন্নতি হচ্ছে কি? উন্নতি হলো জীবনযাত্রার মানের পরিবর্তন। তিনি গণতান্ত্রিক চর্চার অপর্যাপ্ততা, সুশাসনের ব্যর্থতা, প্রশাসনের স্বচ্ছতার অভাব এই উন্নতির পথে অন্তরায়। 

সংলাপের শেষে উন্মুক্ত আলোচনায় বক্তারা প্রতিবন্ধী, দলিত এবং অন্যান্য পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীদের জাতীয় নীতিমালায় অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে আরও মনযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান। পাশাপাশি বেসরকারি এবং নাগরিক সংগঠনগুলোতে আরও বেশি অর্থায়ন নিশ্চিত করতে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে আসার কথা বলেন। 

বাংলাদেশের বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান এবং নাগরিক সংগঠন (সিএসও), নাগরিক প্ল্যাটফর্মের সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগী, সরকারি ও বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিবৃন্দ এবং গণমাধ্যম কর্মীরাও এই সংলাপে অংশগ্রহণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত