Ajker Patrika

ফুট ওভারব্রিজের অভাবে ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হন চবি শিক্ষার্থীরা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, প্রতিনিধি 
ফুট ওভারব্রিজের অভাবে ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হন চবি শিক্ষার্থীরা

শহর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে হাটহাজারি উপজেলায় অবস্থিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে রয়েছে চট্টগ্রাম থেকে পার্বত্য জেলাগুলোতে যাওয়ার প্রধান সড়ক চট্টগ্রাম-রাঙামাটি মহাসড়ক। প্রতিদিন ব্যস্ততম এই মহাসড়ক দিয়ে ৩২টি রুটের বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করে। আর এসব যানবাহনের বেপরোয়া গতিতে প্রতিনিয়তই ঘটে প্রাণহানি। সর্বশেষ গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের পাশে নাজিরহাট থেকে চট্টগ্রামগামী একটি বাস বেপরোয়া গতিতে ছুটে এসে তিনজনকে ধাক্কা দেয়। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর দুজনের মৃত্যু হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে নেই কোনো ফুটওভার ব্রিজ। আর প্রতিদিন মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে পার হন হাজার হাজার শিক্ষার্থী। 

চট্টগ্রাম জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের মহাসচিব মনজুরুল আলম মনজু আজকের পত্রিকাকে বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়ক হলো চট্টগ্রাম-রাঙামাটি মহাসড়ক। এই মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন তিনটি জেলার ৬০টি সড়ক ও ৩২টি রুটের গাড়ি চলাচল করে। এখানে দুর্ঘটনা এড়াতে হলে ফুটওভার ব্রিজ অথবা স্পিড ব্রেকার দেওয়া উচিত। 

শিক্ষার্থীরা জানান, ক্যাম্পাস থেকে শহরে যেতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে রাস্তার অপর পাশে গিয়ে বাসে উঠতে হয়। তিন জেলার বিভিন্ন দূরপাল্লার যানবাহন নিয়মিত চলাচল করা সত্ত্বেও এখানে কোনো ফুটওভার ব্রিজ না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হওয়ায় এ দুটি স্থানে হরহামেশাই সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কিছু সময় পর পর হাত উঁচিয়ে গাড়ি থামিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও পথচারীরা রাস্তা পার হচ্ছে। গাড়ি না থামলে দৌড়ে রাস্তা পার হচ্ছেন অনেকেই। 

ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের শিক্ষার্থী শাকিল হোসেন আইমন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক দিয়ে প্রতিদিনই প্রায় হাজার হাজার শিক্ষার্থী যাতায়াত করেন। তাঁদের বাস কিংবা অন্য যে কোনো যানবাহনে ওঠার জন্য রাস্তা পার হতে হয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ৫৭ বছরে পদার্পণ করলেও এই স্থানে শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে কোনো ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করা হয়নি। এখানে নামে মাত্র একটি স্পিড ব্রেকার আছে যেটি সিনএনজি ছাড়া বড় যানবাহনের গতিরোধের ক্ষেত্রে কার্যকর নয়। 

প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদুল হাসান বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেটে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ খুবই জরুরি এবং আবশ্যকীয়। কোনো প্রকার অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা না ঘটুক সেটিই আমাদের চাওয়া।' 

হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিদুল আলম বলেন, 'অধিক পরিমাণ শিক্ষার্থী রাস্তা পার হওয়াসহ বেশ কিছু কারণে এটি দুর্ঘটনা প্রবণ এলাকা। দুর্ঘটনা শূন্যের কোটায় নিয়ে আসতে আমরা কাজ করছি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আজও কথা বলেছি। আমরা চেয়েছি এখানে কোনো স্পিড ব্রেকার দেওয়া যায় কিনা, তবে হাইওয়ে আইনে এটা না থাকায় সম্ভব হচ্ছে না। ফুটওভার ব্রিজের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাবো।' 

জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা আজকের পত্রিকাকে বলেন, 'এই মুহূর্তে সেখানে ফুটওভার ব্রিজ করার চিন্তাভাবনা নাই। কেউ আগে দাবিও জানায়নি। বিশ্ববিদ্যালয় যদি চায়, তাহলে আমরা এগোব।' 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, 'এ বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করছি।' 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত