Ajker Patrika

সাঁজোয়া যান থেকে ছুড়ে ফেলা শিক্ষার্থীর মৃত্যু: শেখ হাসিনাসহ ৪৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৫ আগস্ট ২০২৪, ১৭: ৩১
সাঁজোয়া যান থেকে ছুড়ে ফেলা শিক্ষার্থীর মৃত্যু: শেখ হাসিনাসহ ৪৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ এক শিক্ষার্থীকে পুলিশের সাঁজোয়া যান থেকে ছুড়ে ফেলার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল। পরে জানা যায়, ওই শিক্ষার্থীর নাম শাইখ আসহাবুল ইয়ামিনের। তিনি ঢাকার সাভারে মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এমআইএসটি) শিক্ষার্থী। ইয়ামিনের মৃত্যুর ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ ৪৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়েছে। আজ রোববার ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুল ইসলামের আদালতে এ মামলা করেন নিহতের মামা আব্দুল্লাহ আল কাবির। 
 
আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে সাভার থানাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন। বাদীপক্ষে মামলা করেন অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান মারুফ ও সাকিল আহমাদ। সাকিল আহমাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

নিহত শাইখ আসহাবুল ইয়ামিন এমআইএসটির কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। 

শেখ হাসিনা ছাড়াও এ মামলার উল্লেখযোগ্য অন্য আসামিরা হলেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন, ঢাকার পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্ ও ট্রাফিক, উত্তর বিভাগ) আব্দুল্লাহিল কাফী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) শাহিদুর রহমান, সাভার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহজামান সাভার থানা, সাভার থানার উপপরিদর্শক সুদীপ, হারুন অর রশিদ ও সাব্বির, সাভারের আন্দোলনে গুলি করে ভাইরাল হওয়া নড়াইলের বাবুল শরিফ (নারী পুলিশ সদস্যের স্বামী), সাভার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজিব ও ঢাকা-১৯ আসনের সংসদ সদস্য মো. সাইফুল ইসলাম। 

মামলার আরজিতে উল্লেখ করা হয়, গত ১৮ জুলাই পুলিশ ও আওয়ামী লীগ সম্মিলিতভাবে সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ড শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা করে। তারা শাইখ আসহাবুল ইয়ামিনকে ধরে টেনে পুলিশের সাঁজোয়া যানের কাছে নিয়ে বেলা ১টা ৩০ মিনিটে বুকের বাঁ পাশে গুলি করে। গুলিতে ইয়ামিনের বুকে অসংখ্য স্প্লিন্টার বিদ্ধ হয়। এ অবস্থায় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা ইয়ামিনকে টেনে সাঁজোয়া যানের ওপরে ফেলে রেখে আন্দোলনরত ছাত্র–জনতাকে ভীতি প্রদর্শনের জন্য গাড়িটি এ পাশ থেকে ওপাশ প্রদক্ষিণ করতে থাকে। এরপর ইয়ামিনকে প্রায় মৃত অবস্থায় রাস্তায় ফেলে দেয় এবং একজন পুলিশ সদস্যকে তাঁর পায়ে আবার গুলির নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই পুলিশ সদস্য ইয়ামিনকে মৃত ভেবে পায়ে গুলি না করে রাস্তার ওপরের একপ্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে টেনে নিয়ে রোড ডিভাইডারের পাশে ফেলে দেয়। 

গুলিবিদ্ধ শাইখ ইয়ামিনকে তখনো সর্বশক্তি দিয়ে নিশ্বাস নিতে দেখা যায়। পুলিশ সদস্যরা ধরাধরি করে উঁচু রোড ডিভাইডারের একপাশ থেকে আরেক পাশে তাঁকে ছুড়ে ফেলে দেন। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত