নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ক্ষুধার্ত সন্তানের কান্না থামাতে বাচ্চার মুখ বুকে চেপে ধরে আছেন এক মা। পাশেই প্রায় হাজার মানুষের চিৎকার, আর্তনাদ। সবকিছু ছাপিয়ে চার বছরের ওই শিশুর কান্নাই যেন একমাত্র সত্য। সবার মনযোগ সেদিকে। কেউ একজন দৌড়ে এসে কান্নারত বাচ্চার মুখে পানির বোতল লাগিয়ে দিলে কিছুক্ষণের জন্য শান্ত হয় সে।
ঘটনা জানতে চাইলে মাবিয়া নামের সেই মা বলেন, ‘টাকার অভাবে চার বছরের বাচ্চাটাকে দুই বেলা পানি আর একবেলা খাবার খাওয়াই। পেটের ক্ষুধায় যখন ছেলে কান্না করে, তখন মনে হয় পরনের শাড়ি গলায় প্যাচ দিয়ে সব যন্ত্রণা শেষ করে দেই।’
কান্নাচাপা কন্ঠে মাবিয়া বলে যান, ‘বাসা ভাড়া বাকি থাকায় বাড়িওয়ালা বের হয়ে যেতে বলেছে; দোকানে আর বাকি দেয় না। খেয়ে, না খেয়ে দিন যাচ্ছে। অথচ তাদের আশ্বাস শেষ হয় না। কবে তারা আশ্বাসমতো টাকা দেবে, আর আমরা পেট ভরে খেতে পাব?’
ধরা গলায় প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন মাবিয়া। সেই দৃষ্টির সামনে দাঁড়িয়ে থাকা যায় না। সেই দৃষ্টি পায়ের তলা থেকে মাটি সরিয়ে নেয়। কিন্তু এমন হাজার হাজার শ্রমিকের শূন্য দৃষ্টির সামনেও শুধু আশ্বাসে অটল হয়ে বসে থাকেন মালিকেরা। মাবিয়া তাঁদেরই একজন।
গত মঙ্গলবার থেকে বকেয়া বেতন আদায়ের দাবিতে গাজীপুরের স্টাইল ক্রাফট নামের একটি পোশাক কারখানার প্রায় হাজারখানেক শ্রমিক অবস্থান নিয়েছেন রাজধানীর শ্রম ভবনের সামনে। লাগাতার এই অবস্থান থেকে তাঁরা শুধু আশ্বাসে আর নড়তে রাজি নন। কিন্তু এবারও আসছে আশ্বাসই শুধু। অথচ মালিক-শ্রমিক ও মন্ত্রণালয় ত্রিপক্ষীয় দুটি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে কারখানাটির মালিক পক্ষ। প্রতিবারই আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। এবারও তাই।
এ কারণে এবার আর হাজার কষ্টেও এই আশ্বাসে বুঝ মানতে রাজি নন শ্রমিকেরা। তাঁদেরই একজন মাবিয়া। শুধু মাবিয়া নন, এখানে যারা অবস্থান নিয়েছেন, তাঁদের সবারই এমন দুর্দশায় দিন যাচ্ছে। তবু তাঁরা আন্দোলন থেকে, নিজের পাওনা আদায়ের দাবি থেকে নড়তে নারাজ।
আজ শুক্রবার দুপুরে রুমানা নামের আরেক শ্রমিকের সঙ্গে কথা হলো। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অবস্থানে আসার পর থেকে আমরা সবাই চাঁদা তুলে দিনে একবেলা করে খাবার খাচ্ছি। শুক্রবার শ্রম ভবন বন্ধ থকায় আমরা টয়লেট করার জায়গাও পাচ্ছি না। ক্ষুধার্ত পেট নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকাও যায় না, তৃষ্ণা পেলে বিনা পয়সায় পানি খাওয়ার উপায়ও নাই শ্রম ভবন বন্ধ থাকার কারণে।’
রোজিনার নামের আরেক শ্রমিক বলেন, রাত হলে এখানে আমরা গরু-ছাগলের মতো শুয়ে থাকি। মশার কামড়, পুলিশের ভয়ে নির্ঘুম রাত কাটে পেটে ক্ষুধার জ্বালা নিয়ে।
আন্দোলনের সংগঠক ও স্টাইল ক্রাফটের ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ার এক্সিকিউটিভ মফিজুর রহমান মামুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত জুলাই থেকে আমরা পাওনা বেতনের দাবিতে আন্দোলন করে যাচ্ছি। কোরবানির ঈদের পর থেকে কারখানা বন্ধ। সুপারভাইজারেরা ১৩ মাস থেকে বেতন পান না। অন্য স্টাফরা বেতন পান না ১০ মাস, আর সাধারণ শ্রমিকেরা বেতন পান না ৪ থেকে পাঁচ মাস। সবারই চার বছরের ছুটির টাকা বাকি। বিভিন্ন স্তরের শ্রমিকেরা ওভার টাইমও পান না বেশ কয়েক মাসের। কোরবানি ঈদের আগে গণহারে সবাইকে ৫ হাজার করে টাকা দেওয়া হয় গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মধ্যস্থতায়। এটা দিয়ে আমাদের শান্ত করে রাখা হয়। এই ৫ হাজার টাকা ছাড়া আমরা বকেয়া বেতন থেকে আর কোনো টাকা পাইনি। পাওনা টাকা আদায়ের আন্দোলন করতে গিয়ে আমরা লাঠি, গুলি ও টিয়ারশেলের মুখোমুখি হয়েছি। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী, শ্রম প্রতিমন্ত্রী, মেয়র, ডিসি—সবাই আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন, আশ্বাস দিয়েছেন; কিন্তু কোনো আশ্বাসেই কাজ হয়নি। আমরা বাধ্য হয়ে এখানে অবস্থান নিয়েছি। হ্যাঁ অথবা না—কোনো একটা সিদ্ধান্ত না নিয়ে আমরা এখান থেকে আর যাব না। আসলে টাকা না নিয়ে আমাদের আর যাওয়ার জায়গাও নেই।’
এ বিষয়ে শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান বলেন, ‘আমি নিজে স্টাইল ক্রাফটের মালিকদের সঙ্গে প্রতিদিন কথা বলছি এই বিষয়ে। তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধ না করলে তাঁকে জেলে যেতে হবে আইন অনুযায়ী। মালিক আমাকে বলেছেন, “টাকা পয়সা গুছিয়ে উঠতে পারছি না। যত দ্রুত সম্ভব টাকা জোগাড় করে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করব। ” আমি প্রয়োজনে তাদের শেয়ার বিক্রি করে শ্রমিকদের টাকা দিতে বলেছি।’
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য স্টাইল ক্রাফটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরিফ আলমাস রহমান শিষকে মোবাইলে মেসেজ পাঠিয়ে এবং একাধিকবার কল করলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
ক্ষুধার্ত সন্তানের কান্না থামাতে বাচ্চার মুখ বুকে চেপে ধরে আছেন এক মা। পাশেই প্রায় হাজার মানুষের চিৎকার, আর্তনাদ। সবকিছু ছাপিয়ে চার বছরের ওই শিশুর কান্নাই যেন একমাত্র সত্য। সবার মনযোগ সেদিকে। কেউ একজন দৌড়ে এসে কান্নারত বাচ্চার মুখে পানির বোতল লাগিয়ে দিলে কিছুক্ষণের জন্য শান্ত হয় সে।
ঘটনা জানতে চাইলে মাবিয়া নামের সেই মা বলেন, ‘টাকার অভাবে চার বছরের বাচ্চাটাকে দুই বেলা পানি আর একবেলা খাবার খাওয়াই। পেটের ক্ষুধায় যখন ছেলে কান্না করে, তখন মনে হয় পরনের শাড়ি গলায় প্যাচ দিয়ে সব যন্ত্রণা শেষ করে দেই।’
কান্নাচাপা কন্ঠে মাবিয়া বলে যান, ‘বাসা ভাড়া বাকি থাকায় বাড়িওয়ালা বের হয়ে যেতে বলেছে; দোকানে আর বাকি দেয় না। খেয়ে, না খেয়ে দিন যাচ্ছে। অথচ তাদের আশ্বাস শেষ হয় না। কবে তারা আশ্বাসমতো টাকা দেবে, আর আমরা পেট ভরে খেতে পাব?’
ধরা গলায় প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন মাবিয়া। সেই দৃষ্টির সামনে দাঁড়িয়ে থাকা যায় না। সেই দৃষ্টি পায়ের তলা থেকে মাটি সরিয়ে নেয়। কিন্তু এমন হাজার হাজার শ্রমিকের শূন্য দৃষ্টির সামনেও শুধু আশ্বাসে অটল হয়ে বসে থাকেন মালিকেরা। মাবিয়া তাঁদেরই একজন।
গত মঙ্গলবার থেকে বকেয়া বেতন আদায়ের দাবিতে গাজীপুরের স্টাইল ক্রাফট নামের একটি পোশাক কারখানার প্রায় হাজারখানেক শ্রমিক অবস্থান নিয়েছেন রাজধানীর শ্রম ভবনের সামনে। লাগাতার এই অবস্থান থেকে তাঁরা শুধু আশ্বাসে আর নড়তে রাজি নন। কিন্তু এবারও আসছে আশ্বাসই শুধু। অথচ মালিক-শ্রমিক ও মন্ত্রণালয় ত্রিপক্ষীয় দুটি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে কারখানাটির মালিক পক্ষ। প্রতিবারই আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। এবারও তাই।
এ কারণে এবার আর হাজার কষ্টেও এই আশ্বাসে বুঝ মানতে রাজি নন শ্রমিকেরা। তাঁদেরই একজন মাবিয়া। শুধু মাবিয়া নন, এখানে যারা অবস্থান নিয়েছেন, তাঁদের সবারই এমন দুর্দশায় দিন যাচ্ছে। তবু তাঁরা আন্দোলন থেকে, নিজের পাওনা আদায়ের দাবি থেকে নড়তে নারাজ।
আজ শুক্রবার দুপুরে রুমানা নামের আরেক শ্রমিকের সঙ্গে কথা হলো। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অবস্থানে আসার পর থেকে আমরা সবাই চাঁদা তুলে দিনে একবেলা করে খাবার খাচ্ছি। শুক্রবার শ্রম ভবন বন্ধ থকায় আমরা টয়লেট করার জায়গাও পাচ্ছি না। ক্ষুধার্ত পেট নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকাও যায় না, তৃষ্ণা পেলে বিনা পয়সায় পানি খাওয়ার উপায়ও নাই শ্রম ভবন বন্ধ থাকার কারণে।’
রোজিনার নামের আরেক শ্রমিক বলেন, রাত হলে এখানে আমরা গরু-ছাগলের মতো শুয়ে থাকি। মশার কামড়, পুলিশের ভয়ে নির্ঘুম রাত কাটে পেটে ক্ষুধার জ্বালা নিয়ে।
আন্দোলনের সংগঠক ও স্টাইল ক্রাফটের ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ার এক্সিকিউটিভ মফিজুর রহমান মামুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত জুলাই থেকে আমরা পাওনা বেতনের দাবিতে আন্দোলন করে যাচ্ছি। কোরবানির ঈদের পর থেকে কারখানা বন্ধ। সুপারভাইজারেরা ১৩ মাস থেকে বেতন পান না। অন্য স্টাফরা বেতন পান না ১০ মাস, আর সাধারণ শ্রমিকেরা বেতন পান না ৪ থেকে পাঁচ মাস। সবারই চার বছরের ছুটির টাকা বাকি। বিভিন্ন স্তরের শ্রমিকেরা ওভার টাইমও পান না বেশ কয়েক মাসের। কোরবানি ঈদের আগে গণহারে সবাইকে ৫ হাজার করে টাকা দেওয়া হয় গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মধ্যস্থতায়। এটা দিয়ে আমাদের শান্ত করে রাখা হয়। এই ৫ হাজার টাকা ছাড়া আমরা বকেয়া বেতন থেকে আর কোনো টাকা পাইনি। পাওনা টাকা আদায়ের আন্দোলন করতে গিয়ে আমরা লাঠি, গুলি ও টিয়ারশেলের মুখোমুখি হয়েছি। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী, শ্রম প্রতিমন্ত্রী, মেয়র, ডিসি—সবাই আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন, আশ্বাস দিয়েছেন; কিন্তু কোনো আশ্বাসেই কাজ হয়নি। আমরা বাধ্য হয়ে এখানে অবস্থান নিয়েছি। হ্যাঁ অথবা না—কোনো একটা সিদ্ধান্ত না নিয়ে আমরা এখান থেকে আর যাব না। আসলে টাকা না নিয়ে আমাদের আর যাওয়ার জায়গাও নেই।’
এ বিষয়ে শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান বলেন, ‘আমি নিজে স্টাইল ক্রাফটের মালিকদের সঙ্গে প্রতিদিন কথা বলছি এই বিষয়ে। তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধ না করলে তাঁকে জেলে যেতে হবে আইন অনুযায়ী। মালিক আমাকে বলেছেন, “টাকা পয়সা গুছিয়ে উঠতে পারছি না। যত দ্রুত সম্ভব টাকা জোগাড় করে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করব। ” আমি প্রয়োজনে তাদের শেয়ার বিক্রি করে শ্রমিকদের টাকা দিতে বলেছি।’
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য স্টাইল ক্রাফটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরিফ আলমাস রহমান শিষকে মোবাইলে মেসেজ পাঠিয়ে এবং একাধিকবার কল করলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপির) উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করেছেন বিএনপি নেতা। সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যায় বিএনপিকে জড়িয়ে অপপ্রচার করার অভিযোগে গাজীপুর আদালতে এ মামলা করেছেন তিনি।
১২ আগস্ট ২০২৫লক্ষ্মীপুরে রামগতিতে নৌকায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ ফারুক হোসেন (৪০) নামে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন দুজন। এখনো চিকিৎসাধীন অবস্থায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন আরও দুজন। আজ মঙ্গলবার ভোরে জাতীয় বার্ন প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফারুক হোসেন মারা যান।
১২ আগস্ট ২০২৫দুই বছর আগে ফেনী পৌরসভার সুমাইয়া হোসেন আনিকা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উদ্যোগে ফ্রিল্যান্সিং ও গ্রাফিক ডিজাইনের প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। এরপর বিভিন্ন অনলাইন প্রতিষ্ঠানে চাকরির চেষ্টা করেও সফল হননি। এখন স্বামীর অনলাইন ব্যবসা দেখাশোনা করছেন। আনিকা বলেন, ‘প্রশিক্ষণ পেয়েছি, কিন্তু কাজের সুযোগ খুবই কম।’ আনিকার
১২ আগস্ট ২০২৫চট্টগ্রাম বন্দরে আন্দোলন দমাতে টাকা দাবির ভিডিও ভাইরালের পর এবার জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) চট্টগ্রাম নগরের যুগ্ম সমন্বয়কারী নিজাম উদ্দিনকে কেন্দ্র থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁকে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না তাঁর লিখিত ব্যাখা আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দলকে জানানো কথা বলা হয়েছে।
১২ আগস্ট ২০২৫