Ajker Patrika

নাহিদ হত্যা মামলা: সিয়াম কারাগারে, এক কর্মচারীর দোষ স্বীকার 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
নাহিদ হত্যা মামলা: সিয়াম কারাগারে, এক কর্মচারীর দোষ স্বীকার 

রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের সময় নিহত নাহিদ হাসানের মৃত্যুর ঘটনায় করা হত্যা মামলার ঢাকা কলেজের ছাত্র মাহমুদুল হাসান সিয়ামকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

আদালতের নিউমার্কেট থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) এস আই সাফায়েত হোসেন শরিফ আজকের পত্রিকাকে এই তথ্য জানান।

দুপুরের পর আসামিকে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশ পরিদর্শক মো. তারিকুল আলম জুয়েল। একই সঙ্গে কারাগারে আটক রাখার আবেদন জানান। গত শুক্রবার সিয়ামকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।

এর আগে সিয়ামকে গত ৪ এপ্রিল শরীয়তপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সিয়াম ঢাকা কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তিনি ঢাকা কলেজের কোনো হলে থাকেন না। বাইরে থেকে এসে তিনি ছাত্রদের সঙ্গে সংঘর্ষে যোগ দিন।

এই মামলায় ঢাকা কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের অনার্স চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আব্দুল কাইয়ুম, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অনার্স চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মাহমুদ এরফান, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র জুনাইদ বুগদাদী, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্র পলাশ মিয়া ও বাংলা অনার্স চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ফয়সাল ইসলাম এই পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে দুই দিনের রিমান্ড শেষে গত ১ মে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। 

গত ২০ এপ্রিল নিহত নাহিদের বাবা মো. নাদিম হোসেন বাদী হয়ে নিউমার্কেট থানায় হত্যা মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় তিনি অজ্ঞাতনামা আসামি উল্লেখ করেন।

নাহিদ একটি কুরিয়ার সার্ভিসে ডেলিভারি ম্যান হিসেবে কাজ করতেন। ঘটনার দিন গত ১৯ এপ্রিল কামরাঙ্গীরচরে বাসা থেকে বের হয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন। এ সময় সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে গুরুতর আহত হন নাহিদ। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানেই তিনি মারা যান।

এর আগে ১৮ এপ্রিল রাত ১২টার দিকে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী ও দোকান কর্মীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টা চলে এ সংঘর্ষ। এরপর রাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলেও ১৯ এপ্রিল সকাল ১০টার পর থেকে ফের দফায় দফায় শুরু হয় সংঘর্ষ। যা চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত।

এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অর্ধ শতাধিক আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। আহতদের মধ্যে মারা যান নাহিদ ও মুরসালিন নামের একজন।
 
সংঘর্ষের ঘটনায় এক দোকান কর্মচারীর দোষ স্বীকার এদিকে গত ১৮ ও ১৯ এপ্রিল ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের কর্তব্যকাজে বাধা, ভাঙচুর ও পুলিশকে আহত করার মামলায় নিউমার্কেটের দোকান কর্মচারী মেহেদী হাসান দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

দুই দোকান কর্মচারী মোয়াজ্জেম হোসেন ও মেহেদী হাসানকে তিন দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক হালদার অর্পিত ঠাকুর। 

দুজনের মধ্যে মেহেদী হাসান স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করায় তদন্ত কর্মকর্তার তার জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করার আবেদন করেন। অন্য আসামিকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন জানান। 

শিক্ষার্থী-বসায়ীদের সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দুটি মামলা করেছিলেন। একটি বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে এবং অন্যটি পুলিশের কর্তব্যকাজে বাধা দান, মারধর ও ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা দুটি হয়। মামলা করেন নিউমার্কেট থানার পুলিশ পরিদর্শক ইয়ামিন কবীর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত