Ajker Patrika

বারান্দায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে ঢাবি রেজিস্ট্রার ভবনের ফাইল

ফারুক ছিদ্দিক, ঢাবি 
বারান্দায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে ঢাবি রেজিস্ট্রার ভবনের ফাইল

হাম্মাদুর (ছদ্মনাম) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। গবেষণার কাজে তথ্য অধিকার আইন অনুসারে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তথ্যের জন্য আবেদন করে। কিন্তু সেই তথ্যগুলো পাওয়ার জন্য স্বাক্ষর যেন শেষ হচ্ছে না। এ দপ্তরে না, অন্য দপ্তরে। আবার সেই দপ্তরে গেলে বলা হয় এখনো উপাচার্য স্বাক্ষর করেনি। এভাবে মাস কেটে যায় তবুও সুনির্দিষ্ট তথ্য পায়নি হাম্মাদুর। 

হাম্মাদুরের সঙ্গে কথা হয় আজকের পত্রিকার। তিনি বলেন, ‘হয়তো আমার তথ্যগুলো কোথায় আছে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানে না। তারা জানলে এত দিনে আমার তথ্যগুলো দিয়ে দিতে পারত। কিন্তু বাইরেও খোলামেলাভাবে অনেক ফাইল পড়ে আছে সেখানেও তথ্যগুলো তো থাকতে পারে।’ 

ভুক্তভোগী হাম্মাদুর একা না, এ রকম ভুক্তভোগী রয়েছে আরও। কাজের অবহেলা, ডিজিটালাইজেশন ও অটোমেশনের আওতায় সকল কার্যক্রম না আসায় ভুক্তভোগী অনেকে। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি এ রকম ভুক্তভোগী শিক্ষকেরাও। 

কবি নজরুল ইসলাম সরকারি কলেজের এক শিক্ষক কলেজের একটি জরুরি ফাইলের জন্য সাত কলেজের দপ্তরে যোগাযোগ করলে তাঁকে এক সপ্তাহে পরে আসতে বলা হয়। সেই শিক্ষকের সঙ্গেও কথা আজকের পত্রিকার। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, ‘দপ্তরের বাইরে এলোমেলোভাবে যেভাবে ফাইল পড়ে আছে তাতে তো ভয় হয় আমার ফাইল ওইখানে আছে কি না। এক সপ্তাহ পর এসে যদি না পাই তাহলে কী হবে? এভাবে হতাশা প্রকাশ করেন তিনি।’ 

সরেজমিনে দেখা যায়, রেজিস্ট্রার ভবনের ২০৬, ২০৭, ২০৮, ২০৮ (ক), ৩০৬, ৩১০, ৩১০ (ক), ৩১১, ৩১১ (ক) ও ৩৪৫ নম্বর কক্ষগুলোর সামনে খোলামেলাভাবে পড়ে আছে বিভিন্ন ফাইল। কতগুলো ফাইল আলমারির ভেতরে থাকলেও অনেক ফাইল রয়েছে সম্পূর্ণ খোলামেলাভাবে। 

সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে কথা বললে তারা জানায়, কক্ষের ভেতরে জায়গা সংকুলান না হওয়াতে ফাইলগুলো বাইরে আছে। তবে সেখানে অনেক আগের ফাইল এবং কম গুরুত্বপূর্ণ ফাইল বলে উল্লেখ করেন তারা। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জায়গা সংকুলান না হওয়াতে কিছু ফাইল বাইরে আছে এটা সত্য কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় মাস্টার প্ল্যান, ই-নথি এবং সকল তথ্য অটোমেশনর আওতায় চলে আসলে এ ধরনের সমস্যা হবে না। আশা করি খুব দ্রুত সমাধান হবে, আমরা চেষ্টা করছি।’ তিনি বলেন, ‘কাল থেকেই ফাইলগুলো নিয়ে কাজ শুরু করব। অপ্রয়োজনীয় ফাইল ফেলে দিয়ে বাকিগুলো অটোমেশনে নিয়ে আসা হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি আমার নজরে নেই। যদি গুরুত্বপূর্ণ কোনো ফাইল ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে তাহলে বিষয়টি হতাশাজনক। আমি বিষয়টি দেখছি। পাশাপাশি সকল কার্যক্রম ক্রমান্বয়ে ডিজিটালাইজেশনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত