Ajker Patrika

কানাডীয় তরুণীর বিষয়ে আদেশ রোববার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
কানাডীয় তরুণীর বিষয়ে আদেশ রোববার

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডীয় তরুণীকে নিয়ে করা রিটের বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী রোববার দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট। আজ বুধবার শুনানি শেষে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের বেঞ্চ এই দিন ধার্য করেন।

শুনানিতে আদালত তরুণীকে বলেন, ‘আপনি যেভাবে চান, সেভাবেই আমরা আদেশ দেব। আপনি চাইলে এখান থেকেই কানাডীয় হাইকমিশনে চলে যেতে পারবেন। আর চাইলে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতে পারবেন। এখন না দিলে রোববারের আগে আর আদেশ দেওয়া যাবে না।’ 

প্রত্যুত্তরে ওই তরুণী বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতে চান। এ সময় আদালত তরুণীর বাবা-মাকে বলেন, ‘আগামী তিন দিন তিনি যা চান, তা দেবেন। তিনি তো চলে যাচ্ছেন। তাঁকে তো আটকে রাখতে পারবেন না। কারণ, তাঁর বয়স ১৮-এর বেশি। আপনারা নির্দেশ অনুযায়ী তাঁকে মোবাইল ফোন, ল্যাপটপে ইন্টারনেট সংযোগ দেননি। এটা ঠিক না। তাঁকে তাঁর মতো করে চলতে দিন। এর পর তিনি থাকতে চাইলে তো আর তাঁকে পাঠানোর প্রয়োজন হবে না।’ পরে আদালত তরুণীসহ সবাইকে আবারও রোববার আসতে বলে সে পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। 

এর আগে সকালে কানাডার হাইকমিশনের পক্ষ থেকে ব্যারিস্টার সারা হোসেন আদালতকে জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ালেখা, থাকা-খাওয়ার খরচ বহনসহ সব ধরনের নিরাপত্তা দেবে কানাডা সরকার। পরে এজলাস কক্ষে একান্তে তরুণীর কথা শোনেন আদালত। এ ছাড়া খাস কামরায় দুই পক্ষের আইনজীবী ও বাবা-মাসহ কথা হয়। পরে সবার উপস্থিতিতে আদালত বলেন, ‘তরুণী বাংলাদেশে থাকতে চান না। তিনি এখান থেকেই কানাডা যেতে চান। তিনি চাইলে আমাদের তো আদেশ দিতেই হবে।’ 

এ সময় তরুণীর বাবা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমি নিজেই আমার মেয়েকে কানাডা নিয়ে যেতে চাই। কয়েকটা দিন আমাদের কাছে থাকুক।’ 

তখন আদালত বলেন, ‘আপনার মেয়ের সঙ্গে কথা বলুন। তিনি যদি আপনাদের সঙ্গে থাকতে চান, তাহলে আমরা রোববার আদেশ দেব। অন্যথায় আজই আদেশ দিয়ে তাঁকে কানাডা হাইকমিশনে পাঠিয়ে দেব।’ পরে আদালত তাঁদের বেলা আড়াইটা পর্যন্ত সময় দেন। 

এর আগে গত রোববার আদালত কানাডীয় ওই তরুণীর ল্যাপটপে ইন্টারনেট সংযোগ এবং তাঁকে মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুযোগ দিতে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত ওই তরুণী বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকবেন বলে আদেশে বলা হয়। গতকাল মঙ্গলবার আবারও এ বিষয়ে শুনানি হয়। ওই সময় আদালত রিটকারী আইনজীবীকে বলেন, ‘ওই তরুণী কানাডা গিয়ে কোথায় থাকবেন, তার পড়ালেখার খরচ কে বহন করবেন কানাডা সরকারের সঙ্গে কথা বলে আমাদের জানান।’ সে অনুযায়ী আজ বুধবার আদালতকে লিখিতভাবে জানানো হয়। 

এর আগে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডীয় ওই তরুণীকে আটকে রাখার অভিযোগ ওঠে তাঁর বাংলাদেশি বাবা–মায়ের বিরুদ্ধে। কানাডীয় হাইকমিশন বিষয়টি নিয়ে আইন ও সালিস কেন্দ্র এবং ব্লাস্টের সঙ্গে যোগাযোগ করলে হাইকোর্টে রিট (হেভিয়াস কর্পাস) করা হয়। পরে হাইকোর্ট তাঁকে নির্দেশ দিলে গত রোববার সে অনুযায়ী তাঁকে আদালতে হাজির করা হয়। 

জানা যায়, ১৯ বছর বয়সী ওই তরুণীর জন্ম কানাডায়। কানাডার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন তিনি। তাঁর বাবা-মাও কানাডায় থাকতেন। ১০ মাস আগে তাঁর বাবা-মা তাঁকে নিয়ে বাংলাদেশে আসেন। এর পর ওই তরুণী কানাডায় ফিরে যেতে চাইলেও তাঁকে যেতে দেওয়া হয়নি। 

ওই তরুণী ল্যান্ড ফোনে কানাডা ও ঢাকায় কানাডীয় হাইকমিশনকে তাঁকে জোরপূর্বক ঘরবন্দী করে রাখার কথা জানান। তরুণীর ফোন পেয়ে গত ৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর মুগদা থানায় কানাডীয় হাইকমিশন থেকে সাধারণ ডায়েরি করা হয়। তার পর হাইকমিশনের পক্ষ থেকে মানবাধিকার সংগঠন ব্লাস্ট, আইন ও সালিস কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ করলে হাইকোর্টে রিট করা হয়। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত