Ajker Patrika

কাজ বন্ধ, ট্রাক–ভ্যানে ঢাকা ছাড়ছে মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : ১৩ এপ্রিল ২০২১, ১৪: ২১
কাজ বন্ধ, ট্রাক–ভ্যানে ঢাকা ছাড়ছে মানুষ

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বিস্তার রোধে চলাচলে আগামীকাল থেকে আট দিনের বিধিনিষেধ দিয়েছে সরকার। এসময় সকল সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি অফিস ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। বন্ধ থাকবে জল, স্থল ও আকাশপথের গণপরিবহন। এর মধ্যেও ঝুঁকি নিয়ে নানা কৌশলে গ্রামের বাড়ি ফিরছেন সাধারণ মানুষ। ভেঙে ভেঙে বিভিন্ন যানবাহনে করে ঢাকা ছাড়ছেন তারা। অবশ্য সব কিছু বন্ধের খবরে দুদিন আগে থেকেই রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছেন কর্মজীবীরা।  

আজ মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) সকাল থেকেই গাবতলীর আমিনবাজার এলাকায় ঘরমুখী মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকলেও ঘরে ফেরা মানুষের কমতি নেই। রাস্তার মোড়ে মোড়ে ঈদ যাত্রার মতো ভিড় ছিল লক্ষ্য করা গেছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, পরিবহন না চললেও মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার ভাড়া করে মানুষ ছুটছে গ্রামের দিকে। এছাড়া পিকআপ ভ্যান ও ট্রাকেও ঠাসাঠাসি করে যাচ্ছে অনেকে। কোনো বাহন না হেঁটেই যাত্রা করেছেন কাছাকাছি এলাকার মানুষ। যে কোনো মুল্যে যেন বাড়ি যেতেই হবে! অবশ্য যানবাহনে যেতে গুণতে হচ্ছে কয়েকগুণ ভাড়া।

রাজধানী থেকে ঘরমুখো মানুষদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মধ্যবিত্ত শ্রেণির লোকজন গাড়ি রিজার্ভ করে রাজধানী ছাড়ছেন। আর ট্রাক, সিএনজি অটোরিকশা, পিকআপ ভ্যানে করে রাজধানী ছাড়ছেন নিম্নআয়ের মানুষ। 

ছবি: আজকের পত্রিকারাজধানীতে রিকশা চালান রহিম আলী, বুধবার থেকে সব বন্ধ থাকবে তাই যাচ্ছেন গ্রামের বাড়ি মাগুরায়। তিনি বলেন, যদি সব বন্ধ থাকে মানুষ বাইরে না আসে তাইলে তো ভাড়া মারতে পারমু না। আর ভাড়া না মারতে পারলে পেট চলবো না। তাই বাড়ি যাইতেছি। এখন আমার কাছে ৮০০ ট্যাকা আছে। কীভাবে যামু সেটা নিয়ে ভাবতেছি। গাবতলী থেকে আমিনবাজার ব্রিজ পর্যন্ত হাঁইটা আসছি। কোনো গাড়ি নাই। শেষ পর্যন্ত মাগুরা যাইতে পারমু কিনা কইতে পারতেছি না।           

মো. আরিফ, মিরপুরে তিনি রাজমিস্ত্রির কাজ করেন, বিধিনিষেধের খবরে কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। তিনি  যাবেন গ্রামের বাড়ি নাটোরে। আরিফ জানান, উপয়ান্তর না পেয়ে আমিনবাজার ব্রিজ থেকে ৮০০ টাকায় বাইক ভাড়া করে যাচ্ছেন পাটুরিয়া ঘাট। সেখান থেকে আবার ভেঙে ভেঙে যাবেন গ্রামে। 

ছবি: আজকের পত্রিকা সকাল ৯টা দুই ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে কোনো যানবাহন পাননি আসমা খাতুন। তিনি বলেন, পাবনা থেকে ঢাকার মিরপুর এসেছিলেন ভাইয়ের বাসায় বেড়াতে। বিধিনিষেধের খবরে আবার গ্রামের বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। কিন্তু আমিনবাজারে দুই ঘণ্টা ধরে বসে থেকেও কোনো পরিবহন পাচ্ছি না।

এখন কীভাবে যাবেন? এমন প্রশ্নে আসমা খাতুন বলেন, কীভাবে যাবো সেটাই তো বুঝতে পারছি না। মহিলা মানুষ চাইলেই তো যে কোনোভাবে যেতে পারি না। এখন গ্রামের বাড়ি যাবো কীভাবে! যদি না যেতে পারি তাহলে আবার ভাইয়ের বাসায়ই থেকে যেতে হবে।  

ঘরমুখী বেশিরভাগ মানুষই গন্তব্যে পৌঁছনো নিয়ে অনিশ্চয়তার কথা জানিয়েছেন। এভাবে ভেঙে ভেঙে কতদূর পৌঁছাতে পারবেন তাঁরা নিজেরাও বুঝতে পারছেন না। কিন্তু গতবছরের লকডাউনের অভিজ্ঞতা ভালো নয়। তাই এবার আর তাঁরা রাজধানীতে থাকার ঝুঁকি নিতে চাইছেন না। অনেক যাত্রী বলছেন, সরকার আটদিনের বিধিনিষেধ দিয়েছে এটা আরও বাড়বে। এ সময় কাজ বন্ধ থাকলে তাঁরা খাবেন কী। তাই বাড়ি চলে যাচ্ছেন।

 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত