Ajker Patrika

এখনো কেউ কিছুই জানে না

আশিকুর রিমেল, ঢাকা
এখনো কেউ কিছুই জানে না

ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার সুবিধার্থে সম্প্রতি রাজধানীর পাঁচটি হাসপাতালকে ডেঙ্গু ডেডিকেটেড হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার। কিন্তু এর মধ্যে একটি হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় সেখানে ভর্তি নেই কোনো রোগী। এমনকি এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুর চিকিৎসা নিতেও আসেননি কেউ। কারণ তাঁরা জানেনই না এই হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হয়।

এর চেয়েও অবাক করা বিষয় হলো, খোদ কর্তৃপক্ষই জানে না যে তাদের হাসপাতালকে গত ২৩ আগস্ট ডেঙ্গু ডেডিকেটেড ঘোষণা করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

আনুষ্ঠানিক ঘোষণার দুই দিন পরও এ বিষয়ে কোনো নির্দেশনা না পাওয়ার কথা জানিয়েছে ‘কামরাঙ্গীরচর ৩১ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল’ কর্তৃপক্ষ।

গতকাল বুধবার সকালে কামরাঙ্গীরচরের এই হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, আট বছর আগে চালু হওয়া হাসপাতালটিতে এখন পর্যন্ত শুধু বহির্বিভাগ চালু আছে। সেখানে চিকিৎসা নিতে টোকেনের জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেল কয়েকজনকে। নিচতলায় সেবা দিচ্ছেন দায়িত্বরত আবাসিক চিকিৎসক। তিন তলাবিশিষ্ট এই হাসপাতাল ভবনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় দেওয়া হচ্ছে করোনার টিকা। তবে বেলা ২টার পরপরই সব কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যেতে দেখা যায় কামরাঙ্গীরচর ৩১ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের।

এ বিষয়ে হাসপাতালটির আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) রাশেদুল হাসান বলেন, ‘ডেঙ্গুর বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো নির্দেশনা আসেনি। আর আমরা বিষয়টি জানিও না।’

এখন যদি কোনো ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী এখানে চিকিৎসার জন্য আসেন, তাহলে কীভাবে সেবা দেবেন জানতে চাইলে হাসপাতালটির বর্তমান অবস্থা ব্যাখ্যা করলেন আরএমও। তিনি জানান, ছয়জন চিকিৎসক আর ছয়জন নার্স নিয়ে এখানে সেবা চলছে। এই লোকবল নিয়ে ডেঙ্গুর চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব না। ডেঙ্গুর চিকিৎসা দিতে হলে হাসপাতালটিতে লোকবল, যন্ত্রপাতি সব ব্যবস্থা করেই তা চালু করতে হবে উল্লেখ করে ডা. রাশেদুল হাসান বলেন, ‘এর আগেও ২০১৯ সালে একবার এ রকম নাম আসছিল, তারপর আর কিছুই হয়নি। যখনই ডেঙ্গুর চাপ বাড়ে, তখনই এ রকম ঘোষণা দেওয়া হয়।’ 
বহির্বিভাগের টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা আফরোজা বেগম  জানান, তিনি তাঁর আট বছর বয়সী ছেলের চিকিৎসার জন্য এসেছেন। আফরোজা বলেন, ‘রাইতে হঠাৎ পেট ব্যথা শুরু হইছিল, পরে ফার্মেসি থাইকা ওষুধ নিয়া খাওয়াইছি। তখন কমছে। সকালে আবার ব্যথা শুরু হইলে ডাক্তারের কাছে আনছি। এইখানে ডেঙ্গু চিকিৎসার কথা জানি না।’

হাসপাতালটির পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা সোনিয়া খাতুন জানান, হাসপাতালকে ডেঙ্গু ডেডিকেটেড করা হয়েছে, সে বিষয়ে কিছু জানা নেই তাঁর।

সার্বিক বিষয় নিয়ে কামরাঙ্গীরচর ৩১ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সোহেলী শারমিনের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও তিনি রাজি হননি।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ৫৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় ছয় লাখ মানুষকে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার লক্ষ্যে ২০১৩ সালে নির্মাণ করা হয় কামরাঙ্গীরচর ৩১ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত