কলেজছাত্র মিথুন হত্যার বিচারের দাবিতে উত্তাল পূবালী চত্বর

মাদক ব্যবসায় বাধা দেওয়ায় কুমিল্লা নগরীর কলেজছাত্র মিথুন ভুঁইয়া হত্যার বিচারের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুর ১২টার পর থেকে নগরীর কান্দিরপাড় পূবালী চত্বর স্লোগানে স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠে।

কুমিল্লার বৃহৎ সামাজিক সংগঠন জাগ্রত মানবিকতার আয়োজনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে মিথুনের পরিবারের সদস্যরা, তাঁর সহপাঠীসহ বিপুলসংখ্যক এলাকাবাসী অংশ নেন।

সমাবেশে মিথুনের মা শিরিন আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার একমাত্র ছেলে মিথুনকে এলাকায় সবাই ভালো হিসেবে জানত। মাদকের প্রতিবাদ করতে গিয়ে সে খুন হলো। আমি এখন কী নিয়ে বাঁচব?’ তিনি খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন।

বাবা লিটন ভুঁইয়া বলেন, ‘মিথুন সব সময়ই মাদকসহ সব ধরনের অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছে। আমাদের ওয়ার্ডে মাদকের আগ্রাসন সবচেয়ে বেশি। মিথুন চেয়েছিল এসব যেন বন্ধ হয়। আর এ জন্যই তাকে প্রাণ হারাতে হলো। আমি আমার ছেলের হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ বিচার চাই।’

সমাপনী বক্তব্যে বিসিবির কাউন্সিলর ও জাগ্রত মানবিকতার উপদেষ্টা সাইফুল আলম রনি বলেন, ‘মাদকের প্রতিবাদ করতে গিয়ে মেধাবী মুখ মিথুন প্রাণ হারিয়েছে। যাঁরাই এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত তাঁদের সবাইকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। আজকের এই কর্মসূচিতে উপস্থিতি প্রমাণ করে কুমিল্লার মানুষ মাদকের বিরুদ্ধে। আমরাও বলিষ্ঠভাবে জানাতে চাই—হয় মাদক ছাড়ো, নয় কুমিল্লা ছাড়ো।’

মানববন্ধনে জাগ্রত মানবিকতার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কাউছার জামান, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সাইয়েব বাপ্পিসহ অন্যান্যরা অংশ নেন। ২৫টি ব্যানার নিয়ে নগরীর পূবালী চত্বর, টাউন হল গেট ও লিবার্টি মোড় পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়া মানববন্ধনে অংশ নেয় হাজারো মানুষ।

মাদক ব্যবসার প্রতিবাদ করায় গত বুধবার মিথুনকে ছুরিকাঘাত করে দুর্বৃত্তরা। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার তাঁর মৃত্যু হয়। কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের মৌলভীপাড়ার লিটন ভুঁইয়ার ছেলে মিথুন জাগ্রত মানবিকতার কো-অর্ডিনেটর ছিলেন।

মিথুন হত্যার পর এ ঘটনায় তাঁর বাবা বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করে। কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আনোয়ারুল আজিম বলেন, ‘মিথুন হত্যার ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে মিরাজ ও রাসেল নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যতটুকু জানতে পেরেছি মাদক ব্যবসায় বাধা দেওয়ার জেরে এই হত্যাকাণ্ড হয়। তদন্তে করলে এর মূল কারণ জানা যাবে।’