মাইনউদ্দিন শাহেদ, কক্সবাজার
রেখা নম। বয়স পঞ্চাশের কোটায়। শৈশবে আক্রান্ত হন পোলিওতে। এতে দু পায়ের গোড়ালি বেঁকে গেলে পঙ্গু হয়ে যান। অনেক কষ্টে হাঁটা চলা করেন।
একপর্যায়ে গ্রামের সাধন নমকে বিয়ে করে জীবনে সুখী হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। কিন্তু বিয়ের বছর দেড়েক পরে চট্টগ্রাম শহরের ট্রেন দুর্ঘটনায় স্বামী সাধন তাঁর ডান পা হারান। নিমেষেই সব স্বপ্ন বিলীন হয়ে যায় রেখার। এতে থমকে যায় দুজনের জীবন। দুজনই হয়ে যান পঙ্গু।
শুরু হয় দুজনের বেঁচে থাকার লড়াই। এর মধ্যে তাদের ঘরে এলো এক কন্যা সন্তান। একপর্যায়ে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার দমদমা গ্রাম ছেড়ে চলে যান কক্সবাজারের চকরিয়ায়। ধর্মান্তরিত হয়ে চকরিয়ার মালুমঘাট চা বাগান খ্রিষ্টান পাড়ায় বসবাস করতে শুরু করেন।
স্বামী-স্ত্রী দুজনই বর্তমানে মালুমঘাট মেমোরিয়াল খ্রিষ্টান হাসপাতালের ‘মনের বাড়ি’ পুনর্বাসনকেন্দ্রে কাজ করছেন। বর্তমানে এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে তাঁদের সংসার। মেয়ে কেয়া নম কুমিল্লা নার্সিং কলেজ থেকে পড়ালেখা শেষ করেছে এবং ছেলে পলক নম চট্টগ্রাম টেকনিক্যাল কলেজে অধ্যয়নরত।
এই ‘মনের বাড়ি’ রেখার মতো অনেক নারীর ঠিকানা। এদের একেক জনের একেক গল্প। কেউবা স্বামী হারিয়েছেন, আবার কেউ স্বামী পরিত্যক্ত হয়েছেন। কিন্তু তাঁরা দমে যাননি। জীবনযুদ্ধে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছেন।
কক্সবাজার শহর থেকে ৪৭ কিলোমিটার দূরে চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারার মালুমঘাট মেমোরিয়াল খ্রিষ্টান হাসপাতাল। প্রসূতি, দুর্ঘটনাসহ নানা চিকিৎসা সেবায় এ হাসপাতালের সুনাম দীর্ঘদিনের। সম্প্রতি এ হাসপাতালকে আরও বড় পরিসরে সম্প্রসারণ করা হয়েছে। হাসপাতালের পুরোনো টিন সেট ভবনের উত্তর গেটে যেতেই একটি সাইনবোর্ড নজর কাড়ে। তাতে লেখা আছে ‘মনের বাড়ি’।
সাইনবোর্ডের পথ ধরে ঢুকেই ‘মনের বাড়ি’। সুন্দর করে সাজানো গোছানো শোরুম। নানান পণ্যের সমাহার। শিশুদের পুতুল, বাঁশের তৈরি নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য, বেড সিট, বালিশ কভার, তোয়ালে, ড্রেস, কাপড়, কৃত্রিম পা আরও কত কিছু।
এই পণ্যগুলো কোথা থেকে আসছে জানতে চাইলে দায়িত্বরত এক তরুণী জানান, সব পণ্য এখানেই (মনের বাড়ি) তৈরি করা হয়। কয়েক কদম হেঁটে গেলেই দেখতে পাবেন এখানকার পণ্য তৈরির কারখানা। কারখানায় ঢুকতেই দেখা গেল এক পাশে ১৫-১৬ জন নারীর ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। এদের কেউ কাপড় সেলাই করছেন, কেউ পুতুলের গায়ে নানা রঙের শৈলীর কাজ করছেন। অন্যদিকে দুজন পুরুষ বাঁশ ও কাঠের পণ্য তৈরির কাজে ডুবে আছেন। যে যার মতোই ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছেন। অপূর্ব তাঁদের বুনন শৈলী। তাদেরও আছে নানান গল্প। একেক নারীর একেক গল্প। রেখার জীবনের মতো অন্যদের জীবনেও আছে আলাদা আলাদা কষ্ট। কিন্তু তাঁরা সংগ্রাম করে টিকে আছেন। অধিকাংশেরই স্বামী মৃত, অথবা স্বামী ছেড়ে চলে গেছেন।
এখানকার একজন লক্ষ্মী দে। বয়স ৫৮ বছর। বাড়ি হাসপাতাল সংলগ্ন ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক এলাকায়। ১৯৮০ সালে বিয়ে হয়। বিয়ের চার বছরের মাথায় স্বামী সুজন দে নিরুদ্দেশ হয়ে যান। বেঁচে আছে কিনা মারা গেছেন-তাও জানেন না। এখন পরিচয়ের খাতায় স্বামী মৃত লেখেন তিনি।
এই লক্ষ্মী দে খেয়ে না খেয়ে একমাত্র ছেলে চিত্র রঞ্জন দে কে শিক্ষিত করেন। ছেলে এখন হাই স্কুলের শিক্ষক। ছেলে, বউ ও দুই নাতি নিয়ে তাঁর সুখের সংসার। প্রায় তিন যুগ ধরে তিনি ‘মনের বাড়িতে’ কাজ করছেন। তাঁর পরিবারে এখন সুখ শান্তির কমতি নেই। তারপরও তাঁর মন ‘মনের বাড়িতে’ পড়ে থাকে। এখানেই তিনি সব সময় সুখ-শান্তি খুঁজে বেড়ান।
‘মনের বাড়ির’ ব্যবস্থাপক সাথি দে এই বাড়ির বিষয়ে বলেন, ‘এই মনের বাড়ির রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর যুদ্ধাহত, নির্যাতিত ও সুবিধা বঞ্চিত নারীদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। অনেক যুদ্ধাহত নারী এই প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। তাদের মধ্যে বেশির ভাগই মারা গেছেন। বর্তমানে ১৮ জন নারী এখানে কাজ করছেন। এটি একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। এখানকার তৈরিকৃত পণ্য হাসপাতালে সরবরাহ করা হয়। আবার কিছু পণ্য অর্ডারের ভিত্তিতে আড়ংয়েও দেওয়া হয়।’
রেখা নম। বয়স পঞ্চাশের কোটায়। শৈশবে আক্রান্ত হন পোলিওতে। এতে দু পায়ের গোড়ালি বেঁকে গেলে পঙ্গু হয়ে যান। অনেক কষ্টে হাঁটা চলা করেন।
একপর্যায়ে গ্রামের সাধন নমকে বিয়ে করে জীবনে সুখী হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। কিন্তু বিয়ের বছর দেড়েক পরে চট্টগ্রাম শহরের ট্রেন দুর্ঘটনায় স্বামী সাধন তাঁর ডান পা হারান। নিমেষেই সব স্বপ্ন বিলীন হয়ে যায় রেখার। এতে থমকে যায় দুজনের জীবন। দুজনই হয়ে যান পঙ্গু।
শুরু হয় দুজনের বেঁচে থাকার লড়াই। এর মধ্যে তাদের ঘরে এলো এক কন্যা সন্তান। একপর্যায়ে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার দমদমা গ্রাম ছেড়ে চলে যান কক্সবাজারের চকরিয়ায়। ধর্মান্তরিত হয়ে চকরিয়ার মালুমঘাট চা বাগান খ্রিষ্টান পাড়ায় বসবাস করতে শুরু করেন।
স্বামী-স্ত্রী দুজনই বর্তমানে মালুমঘাট মেমোরিয়াল খ্রিষ্টান হাসপাতালের ‘মনের বাড়ি’ পুনর্বাসনকেন্দ্রে কাজ করছেন। বর্তমানে এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে তাঁদের সংসার। মেয়ে কেয়া নম কুমিল্লা নার্সিং কলেজ থেকে পড়ালেখা শেষ করেছে এবং ছেলে পলক নম চট্টগ্রাম টেকনিক্যাল কলেজে অধ্যয়নরত।
এই ‘মনের বাড়ি’ রেখার মতো অনেক নারীর ঠিকানা। এদের একেক জনের একেক গল্প। কেউবা স্বামী হারিয়েছেন, আবার কেউ স্বামী পরিত্যক্ত হয়েছেন। কিন্তু তাঁরা দমে যাননি। জীবনযুদ্ধে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছেন।
কক্সবাজার শহর থেকে ৪৭ কিলোমিটার দূরে চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারার মালুমঘাট মেমোরিয়াল খ্রিষ্টান হাসপাতাল। প্রসূতি, দুর্ঘটনাসহ নানা চিকিৎসা সেবায় এ হাসপাতালের সুনাম দীর্ঘদিনের। সম্প্রতি এ হাসপাতালকে আরও বড় পরিসরে সম্প্রসারণ করা হয়েছে। হাসপাতালের পুরোনো টিন সেট ভবনের উত্তর গেটে যেতেই একটি সাইনবোর্ড নজর কাড়ে। তাতে লেখা আছে ‘মনের বাড়ি’।
সাইনবোর্ডের পথ ধরে ঢুকেই ‘মনের বাড়ি’। সুন্দর করে সাজানো গোছানো শোরুম। নানান পণ্যের সমাহার। শিশুদের পুতুল, বাঁশের তৈরি নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য, বেড সিট, বালিশ কভার, তোয়ালে, ড্রেস, কাপড়, কৃত্রিম পা আরও কত কিছু।
এই পণ্যগুলো কোথা থেকে আসছে জানতে চাইলে দায়িত্বরত এক তরুণী জানান, সব পণ্য এখানেই (মনের বাড়ি) তৈরি করা হয়। কয়েক কদম হেঁটে গেলেই দেখতে পাবেন এখানকার পণ্য তৈরির কারখানা। কারখানায় ঢুকতেই দেখা গেল এক পাশে ১৫-১৬ জন নারীর ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। এদের কেউ কাপড় সেলাই করছেন, কেউ পুতুলের গায়ে নানা রঙের শৈলীর কাজ করছেন। অন্যদিকে দুজন পুরুষ বাঁশ ও কাঠের পণ্য তৈরির কাজে ডুবে আছেন। যে যার মতোই ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছেন। অপূর্ব তাঁদের বুনন শৈলী। তাদেরও আছে নানান গল্প। একেক নারীর একেক গল্প। রেখার জীবনের মতো অন্যদের জীবনেও আছে আলাদা আলাদা কষ্ট। কিন্তু তাঁরা সংগ্রাম করে টিকে আছেন। অধিকাংশেরই স্বামী মৃত, অথবা স্বামী ছেড়ে চলে গেছেন।
এখানকার একজন লক্ষ্মী দে। বয়স ৫৮ বছর। বাড়ি হাসপাতাল সংলগ্ন ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক এলাকায়। ১৯৮০ সালে বিয়ে হয়। বিয়ের চার বছরের মাথায় স্বামী সুজন দে নিরুদ্দেশ হয়ে যান। বেঁচে আছে কিনা মারা গেছেন-তাও জানেন না। এখন পরিচয়ের খাতায় স্বামী মৃত লেখেন তিনি।
এই লক্ষ্মী দে খেয়ে না খেয়ে একমাত্র ছেলে চিত্র রঞ্জন দে কে শিক্ষিত করেন। ছেলে এখন হাই স্কুলের শিক্ষক। ছেলে, বউ ও দুই নাতি নিয়ে তাঁর সুখের সংসার। প্রায় তিন যুগ ধরে তিনি ‘মনের বাড়িতে’ কাজ করছেন। তাঁর পরিবারে এখন সুখ শান্তির কমতি নেই। তারপরও তাঁর মন ‘মনের বাড়িতে’ পড়ে থাকে। এখানেই তিনি সব সময় সুখ-শান্তি খুঁজে বেড়ান।
‘মনের বাড়ির’ ব্যবস্থাপক সাথি দে এই বাড়ির বিষয়ে বলেন, ‘এই মনের বাড়ির রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর যুদ্ধাহত, নির্যাতিত ও সুবিধা বঞ্চিত নারীদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। অনেক যুদ্ধাহত নারী এই প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। তাদের মধ্যে বেশির ভাগই মারা গেছেন। বর্তমানে ১৮ জন নারী এখানে কাজ করছেন। এটি একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। এখানকার তৈরিকৃত পণ্য হাসপাতালে সরবরাহ করা হয়। আবার কিছু পণ্য অর্ডারের ভিত্তিতে আড়ংয়েও দেওয়া হয়।’
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপির) উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করেছেন বিএনপি নেতা। সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যায় বিএনপিকে জড়িয়ে অপপ্রচার করার অভিযোগে গাজীপুর আদালতে এ মামলা করেছেন তিনি।
১২ আগস্ট ২০২৫লক্ষ্মীপুরে রামগতিতে নৌকায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ ফারুক হোসেন (৪০) নামে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন দুজন। এখনো চিকিৎসাধীন অবস্থায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন আরও দুজন। আজ মঙ্গলবার ভোরে জাতীয় বার্ন প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফারুক হোসেন মারা যান।
১২ আগস্ট ২০২৫দুই বছর আগে ফেনী পৌরসভার সুমাইয়া হোসেন আনিকা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উদ্যোগে ফ্রিল্যান্সিং ও গ্রাফিক ডিজাইনের প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। এরপর বিভিন্ন অনলাইন প্রতিষ্ঠানে চাকরির চেষ্টা করেও সফল হননি। এখন স্বামীর অনলাইন ব্যবসা দেখাশোনা করছেন। আনিকা বলেন, ‘প্রশিক্ষণ পেয়েছি, কিন্তু কাজের সুযোগ খুবই কম।’ আনিকার
১২ আগস্ট ২০২৫চট্টগ্রাম বন্দরে আন্দোলন দমাতে টাকা দাবির ভিডিও ভাইরালের পর এবার জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) চট্টগ্রাম নগরের যুগ্ম সমন্বয়কারী নিজাম উদ্দিনকে কেন্দ্র থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁকে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না তাঁর লিখিত ব্যাখা আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দলকে জানানো কথা বলা হয়েছে।
১২ আগস্ট ২০২৫