Ajker Patrika

চবির ৯ জোড়া শাটল ট্রেনের মধ্যে ৫ জোড়াই বন্ধ, ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
চবির ৯ জোড়া শাটল ট্রেনের মধ্যে ৫ জোড়াই বন্ধ, ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা

শহর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের প্রধান বাহন শাটল ট্রেন। প্রতিদিন শাটল ট্রেনে করে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী শহর থেকে ক্যাম্পাসে আসা যাওয়া করে। তবে দীর্ঘদিন ধরে ৯ জোড়া শাটল ট্রেনের মধ্যে ৫ জোড়া শাটল ট্রেনই বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে দুই জোড়া ডেমু বন্ধ তিন মাস ধরে। আর তিন জোড়া শাটল ট্রেন বন্ধ প্রায় এক মাস ধরে। এতে করে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজার হাজার শিক্ষার্থী। 

আজ মঙ্গলবার থেকে নতুন শিক্ষাবর্ষের ক্লাস শুরু হওয়ায় এই ভোগান্তির মাত্রা বেড়েছে কয়েকগুণ। ফলে শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়ে অনেকে ঝুঁকি নিয়ে শাটলের ছাদে করে যাতায়াত করছেন। আবার কেউবা বাড়তি ভাড়া দিয়ে যাচ্ছেন বিকল্প উপায়ে। 

জানা যায়, গত ২৬ জানুয়ারি থেকে মাইলেজ ইস্যুতে কর্মবিরতিতে যায় লোকো মাস্টাররা। এতে করে সারা দেশের রেল যোগাযোগ স্থবির হয়ে পরে। লোকো মাস্টার সংকটে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন জোড়া শাটল ট্রেন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে দুই দিনের মাথায় লোকো মাস্টাররা আন্দোলন স্থগিত করলে ফের স্বাভাবিক হয়ে যায় সারা দেশের রেল যোগাযোগ। কিন্তু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেন চালু হয়নি গত এক মাসেও। এর আগে গত বছর ১১ নভেম্বর পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত দুই জোড়া ডেমু ট্রেন বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। 

শিক্ষার্থীরা জানান, এমনিতে শিক্ষার্থীর তুলনায় শাটল সংখ্যা অপ্রতুল। এর মধ্যে তিন জোড়া শাটল ও দুই জোড়া ডেমু বন্ধ থাকায় ভোগান্তির মাত্রা বেড়েছে কয়েকগুণ। শাটলে সিট খালি তো দূরের কথা তিল ধারণের ঠাঁই পর্যন্ত নেই। বাধ্য হয়ে অনেককে ঝুঁকি নিয়ে শাটলের ছাদে উঠতে হচ্ছে। 

ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী সাগর মাহমুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, এমনিতেই শাটলে আসন সংকট। তার ওপর আজ থেকে নবীনদের ক্লাস শুরু হচ্ছে। ৮টার ট্রেন বটতলী স্টেশনেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে। সমানসংখ্যক শিক্ষার্থী ষোলশহরেও অপেক্ষারত। এরা কীভাবে যাবে? ডেমুও বন্ধ আছে অনেক দিন। চরম ভোগান্তিতে পড়েছি আমরা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কিংবা রেলওয়ের কারওরই যেন কোন দায় নেই। 

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী শাকিল আহমেদ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চাইলেই শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমাতে পারে। কিন্তু তাদের পক্ষ থেকে কোন সদিচ্ছা আমরা দেখতে পাচ্ছি না। রেলমন্ত্রী নতুন শাটল দেওয়ার ঘোষণা দিলেন, সেটা পাওয়া তো দূরের কথা আগে যেগুলো ছিল সেগুলোও গায়েব হয়ে গেছে। শাটলের অভাবে ভোগান্তি অসহনীয় হয়ে গেছে। 

মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ শরীফ হোসাইন বলেন, আমার নয়টা থেকে ভাইভা ছিল। কিন্তু সাড়ে ৭টার ট্রেন বন্ধ থাকায় আমাকে আটটার ট্রেনে যেতে হয়েছে। এতে আমার অনেকক্ষণ দেরি হয়ে গেছে। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বাণিজ্যিক কর্মকর্তা আনসার আলী বলেন, আমার কাছে যে তথ্য আছে সেটা হলো বিভিন্ন লোকবল, ইঞ্জিন ও কোচ সংকটের কারণে ট্রেনগুলো বন্ধ আছে। তবে চালুর বিষয়ে জানতে হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া ইসলাম আজকের পত্রিকা বলেন, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে গতকাল (সোমবার) রাতেও আমাদের কথা হয়েছে। আমরা আমাদের শিডিউল অনুযায়ী ট্রেনগুলো চালাতে বলেছি। তারা সম্ভবত লোকবল সংকটে নিয়মিত শিডিউলে ট্রেন চালাতে পারছে না। তবে শিগগিরই নিয়মিত শিডিউলে ট্রেন চালানোর বিষয়ে তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। 

তবে এ বিষয়ে জানতে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় ট্রেনগুলো বন্ধ রাখা হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যদি আগে জানানো হতো তাহলে আজকে থেকে আরও কিছু ট্রেন চালাতে পারতাম। আগে জানানো হয় নাই বলে প্রস্তুতির জন্য এখন আমাদের কয়েক দিন সময় লাগবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত