Ajker Patrika

দুদকের প্রতিবেদন নাকচ, শরীফের তদন্ত আমলে নিলেন আদালত

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১১ এপ্রিল ২০২৩, ১০: ৫৩
দুদকের প্রতিবেদন নাকচ, শরীফের তদন্ত আমলে নিলেন আদালত

জালিয়াতির মাধ্যমে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার এক মামলায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দাখিল করা চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ না করে মামলার বাদী সম্প্রতি চাকরি হারানো দুদক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিনের প্রতিবেদন আমলে নিয়েছেন আদালত। 

একইসঙ্গে মামলার আসামি সাবেক প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়কমন্ত্রী নুরুল ইসলামের ছেলে মুজিবুর রহমানসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুননেছার আদালত গতকাল রোববার এজাহারে থাকা পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেন বলে দুদকের প্রসিকিউশন শাখার সহকারী পরিদর্শক আবদুল লতিফ জানান।

গতকাল রোববার মামলাটির ধার্য তারিখ ছিল। এদিন বিকেল ৫টায় আদেশ দেওয়া হয়েছিল। আজ সোমবার সকালে আদেশের বিষয়ে জানা যায়।

গত ফেব্রুয়ারিতে মামলাটির তদন্ত শেষে দুদক চট্টগ্রামের উপপরিচালক মো. আতিকুল আলম চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছিলেন। এ সময় সমালোচনার মুখে পড়ে দুদক।

ওই সময় সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চট্টগ্রামের সম্পাদক আখতার কবির চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেছিলেন, যেকোনো বিষয়ে মামলা করার আগে দুদক ঘটনা অনুসন্ধান করে থাকে। অনুসন্ধানে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার পর মামলা করা হয়। শরীফও সত্যতা পেয়ে মামলাটি করেছিলেন। দুদক ওই মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে নিজেদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেন।

২০২১ সালের ১০ জুনবাদী হয়ে মামলাটি করেছিলেন। মামলার এজাহারে বলা হয়েছিল, চট্টগ্রাম নগরের হালিশহর এলাকার বাসিন্দা এম এ সালামের (বর্তমানে মৃত) নামে বরাদ্দ ১৮টি অব্যবহৃত দ্বৈত চুলার গ্যাস সংযোগ ছিল। এর মধ্যে ১২টি নগরের চান্দগাঁও সানোয়ারা আবাসিক এলাকার গ্রাহক মুজিবুর রহমানের নামে স্থানান্তর করা হয়। এ কাজে সালামের স্ত্রীর নামে ভুয়া চুক্তিনামাও করা হয়।

এজাহার অনুযায়ী সালাম ও মুজিবুরের গ্রাহক সংকেত পৃথক হওয়ায় সংযোগ স্থানান্তরের কোনো আইনগত বৈধতা নেই। এ ছাড়া ২০১৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে গ্যাস সংযোগ দেওয়া বন্ধ থাকলেও সে সিদ্ধান্ত অমান্য করে মুজিবুরের নামে আরও ১০টি সংযোগ দেওয়া হয়। ২০১৭ সালের ২ মার্চ থেকে পরের বছরের ২ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে এসব সংযোগ দেওয়া হয়েছিল। এ সময়কালে ভুয়া আবেদনপত্র তৈরির মাধ্যমে গ্রাহক মুজিবুরের নামে মোট ২২টি অবৈধ সংযোগ দেওয়া হয়।

মামলা হওয়ার তিন দিন পর ২০২১ সালের ১৩ জুন অবৈধ ২২টি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে কেজিডিসিএল। কেজিডিসিএলের তিন কর্মকর্তাকেও গ্রেপ্তার করে দুদক। পরে অবশ্য তাঁরা জামিনে বেরিয়ে আসেন। 

মন্ত্রীপুত্র মুজিবুর রহমান ছাড়া এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) সাবেক মহাব্যবস্থাপক (ইঞ্জিনিয়ারিং ও সার্ভিসেস) মো. সারওয়ার হোসেন, দক্ষিণ জোনের সাবেক টেকনিশিয়ান (সার্ভেয়ার) মো. দিদারুল আলম, সাবেক মহাব্যবস্থাপক (বিপণন) মোহাম্মদ আলী চৌধুরী ও সাবেক ব্যবস্থাপক মজিবুর রহমান।

আখতার কবির চৌধুরী আরও বলেন, আদালত দুদকের তদন্ত গ্রহণ না করার অর্থ হলো শরীফের করা তদন্ত সঠিক ছিল। শরীফের চাকরিচ্যুতির পর আসামিরা এক জোট হয়ে শরীফের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনও করেছিলেন।

গত বছরের ১৬ নভেম্বর গ্যাস জালিয়াতি, অবৈধ সম্পদ অর্জন করার অভিযোগে দুদক যাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করে, তাঁরাই সংবাদ সম্মেলন করেন। তাঁরা হলেন গ্যাস জালিয়াতিতে অভিযুক্ত ও দুদকের মামলার আসামি কর্ণফুলী গ্যাসের সারোয়ার হোসেন, একই মামলার আসামি দিদারুল আলম, অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলার আসামি আরএফ বিল্ডার্সের মালিক হাজী দেলোয়ার হোসেন। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলার বাদী ছিলেন দুদকের শরীফ উদ্দিন।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত