Ajker Patrika

‘৪ ডিসেম্বর লোক জমায়েত করতে বিরিয়ানির অর্ডার দিয়েছে আ. লীগ’

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
‘৪ ডিসেম্বর লোক জমায়েত করতে বিরিয়ানির অর্ডার দিয়েছে আ. লীগ’

আগামী ৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে শেখ হাসিনার জনসমাবেশে লোক জমায়েত করতে অগ্রিম বিরিয়ানির অর্ডার দিয়ে রেখেছে বলে মন্তব্য করেছেন নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন। আজ শনিবার বিকেলে নগরীর নাসিমন ভবনের বিএনপি কার্যালয়ের চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

গত বুধবার দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের নতুন কমিটিকে স্বাগত জানিয়ে আনন্দ মিছিলে পুলিশের হামলা ও আহ্বায়ক  মঞ্জুর আলম তালুকদারসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সরকারের উদ্দেশ্যে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, ‘এত দিন পর আপনারা গণতন্ত্রের ধারায় ফিরে এসেছেন। এর আগে দেশকে আওয়ামীতন্ত্রে পরিণত করে, ধর-পাকড়, মামলা ও খুন করে দেশকে ত্রাসের রাজত্বে পরিণত করেছেন। সেটি থেকে আপনারা বের হয়ে গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরে এসেছেন। একটা কথা বলতে চাই, আপনার সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, চট্টগ্রামের মন্ত্রী-এমপি ও নারায়ণগঞ্জের কে এক নেতা ওসমান নে তুসমান-আপনাদেরতো দায়িত্ব দিই নাই ১২ অক্টোবর পলোগ্রাউন্ড মাঠে কী পরিমাণ লোক জমায়েত হয়েছে বলতে। গণনার দায়িত্ব কী আপনাদের দিয়েছিলাম?’

৪ ডিসেম্বর বিরিয়ানির প্যাকেট রাস্তায় রাস্তায় পড়ে থাকবে বলে মন্তব্য করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

নগর বিএনপির আহ্বায়ক বলেন, ‘জনগণ দেখেছে ১২ অক্টোবর কী পরিমাণ লোক জমায়েত হয়েছে। সকাল ৭টা থেকে পলোগ্রাউন্ড মাঠে মানুষ আসে। লোক এত বেশি ছিল, পলোগ্রাউন্ড মাঠ পূর্ণ হয়ে নিউমার্কেট, সিআরবি, কাজির দেউড়ি পর্যন্ত মানুষের ভিড়ে যাওয়া যাচ্ছিল না। আপনারা যেহেতু বলছেন জোর করে, এক লাখ লোক হয়েছে। তাহলে আমার একটি প্রস্তাব রয়েছে ওবায়দুল কাদেরের কাছে। আমি যেসব জায়গার নাম বললাম, পলোগ্রাউন্ড থেকে ওই সব জায়গা মাপেন। আপনাদেরই গণনায় বুঝতে পারবেন, সেদিন চট্টগ্রামে কী পরিমাণ মানুষ জমায়েত হয়েছে। আমরা বলছি ১০ লাখের অধিক কিন্তু জনগণ বলছে আরও বেশি।’

জেলা বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘আমরাতো খালেদা জিয়া ছাড়া সমাবেশ করেছি। আপনারা শেখ হাসিনা ছাড়া শুধু ওবায়দুল কাদের দিয়ে মিটিং করেন, দেখেন কী পরিমাণ লোক হয়। এখন থেকে খবর পাচ্ছি, সামনের সমাবেশকে ঘিরে আওয়ামী লীগ নাকি বিরিয়ানির দোকানে অর্ডার দিয়ে রাখছে। আমরাতো এসব করি নাই। তারপরও জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। মানুষ না খেয়ে, রোজা রেখে যে যেভাবে পেরেছে সমাবেশে যোগ দিয়েছে। এর মধ্যেও আসার পথে নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা হয়েছে। আমরা দেখতে পাব ৪ ডিসেম্বর বিরিয়ানির প্যাকেট রাস্তায় রাস্তায় পড়ে থাকবে। নারায়ণগঞ্জে তারা একটি সমাবেশ করেছে, চেয়ার আছে লোক নাই।’ 

প্রধান বক্তার বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব আবুল হাশেম বক্কর বলেন, ‘প্রহসনমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে জোর করে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলকারী বর্তমান সরকার দেশব্যাপী বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে ভয়াবহ দুঃশাসনের এক জঘন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বিভিন্ন বাহিনীকে অন্যায়ভাবে নিজেদের হীন স্বার্থে অপব্যবহার করে সরকার তাদেরকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করাচ্ছে। মানুষের কল্যাণে কাজ না করে ক্ষমতার দাম্ভিকতায় ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে দেশকে গভীর সংকটে ফেলে দিয়েছে। সারা দেশে বিরোধী দলের ওপর নির্যাতন চালিয়ে দেশকে ত্রাসের রাজ্যে পরিণত করেছে। অবিলম্বে নেতা-কর্মীদের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে গ্রেপ্তারকৃতদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি করছি।’ 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘জোর করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় টিকে থাকতে অবৈধ সরকারের জুলুম নির্যাতনের মাত্রা এখন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। দেশব্যাপী বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে চলমান নির্যাতন নিপীড়নের ধারাবাহিকতায়ই মঞ্জুর আলম তালুকদারসহ ১০ জন নেতাকে অন্যায়ভাবে কারাবন্দী করে রেখেছে। কিন্তু হামলা মামলার মাধ্যমে বিএনপিকে দমিয়ে রাখতে পারেনি, পারবেও না। বিএনপি কোনো সময় আপস করেনি। এসব বানোয়াট মামলা দিয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীদের ঘরে আবদ্ধ করে রাখতে পারবে না।’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বে করেন চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলে সভাপতি এইচ এম রাশেদ খান এবং পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত