Ajker Patrika

চবি ছাত্রলীগে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চবি ছাত্রলীগে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৪

নিজেদের গ্রুপের মধ্যে নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে মধ্যরাতে সংঘর্ষে জড়িয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের বিজয় গ্রুপের দুই পক্ষের নেতা কর্মীরা। এতে উভয় পক্ষের চারজন আহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আলাওল হলে এ ঘটনা ঘটে। 

ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, আবাসিক হল বন্ধ থাকলেও ছাত্রলীগের কর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা হলে অবস্থান করে বলে অভিযোগ রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে বিজয় গ্রুপের নেতৃত্বে আছেন শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইলিয়াস ও অর্থ সম্পাদক জাহেদুল আওয়াল। তবে সম্প্রতি তাঁদের গ্রুপেরই একটি অংশ এই দুজনের নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থা আনেন। এই নিয়েই মূলত সংঘর্ষ। গতকাল মধ্যরাতে আলাওল হলে বিজয় গ্রুপের একাংশের কর্মী জাহিদ চৌধুরীকে অপর অংশের কর্মীরা মারধর করেন। এ সময় মুজাহিদ কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে সেখানে গেলে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। 

সংঘর্ষে আহতরা হলেন, হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. জাহিদ চৌধুরী, সংস্কৃত বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের মো. মুজাহিদ, রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের সাব্বির আহমেদ ও আরবি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের সাহিল কবির। এদের মধ্যে প্রথম দুজনকে চবি মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। 

বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. টিপু সুলতান বলেন, আমাদের এখানে চার শিক্ষার্থী চিকিৎসা নিতে এসেছে। এদের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর। তাঁদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। একজনের মাথায় কোপ দেওয়া হয়েছে, আরেকজনের সারা শরীরে রড দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। 

এদিকে আহত মুজাহিদের বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক ব্যক্তিকে মারধরের অভিযোগ ছিল। তাঁর পিতা জাকির হোসেন চাকসু কর্মকর্তা ও জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলেও অভিযোগ আছে। 

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতি মূলত দুটি পক্ষে বিভক্ত। এক পক্ষ শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত। অন্য পক্ষ সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী। দু’টি পক্ষ আবার ১১টি উপপক্ষে বিভক্ত বলে জানা গেছে। 

সংঘর্ষের বিষয়ে বিজয় গ্রুপের নেতা ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াস বলেন, জামায়াতের আমির জাকির হোসেনের ছেলে মুজাহিদ অনেক দিন ধরে ছাত্রলীগের কর্মী হয়েও শিবিরের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছিল। তাঁর বাবা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী সেজে শিবিরের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে। সর্বশেষ সে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে ছাত্রলীগের ছেলেদের গতিরোধ করে। তাই ছাত্রলীগের ছেলেরা তাঁকে প্রতিহত করে। আমরা তাঁকে গ্রুপ থেকে বের করে দিয়েছি। 

নিজেকে বিজয়ের একাংশের নেতা দাবি করে বিজয় গ্রুপের কর্মী আল আমিন বলেন, বিজয়ের মহেশখালী-কুতুবদিয়া গ্রুপ অতর্কিতভাবে আলাওল হলে এসে আমাদের তিন কর্মীর ওপর হামলা করেছে। তাঁরা তাঁদের আঞ্চলিক রূপে আবার ফিরে গেছে। 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, আমরা তদন্ত কমিটি করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত