সোহেল মারমা, চট্টগ্রাম
প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে তদন্ত করার কারণেই চাকরি হারিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপসহাকারী পরিচালন মো. শরীফ উদ্দিন। এমনটাই মনে করছেন অনেকে। যদিও দুদক স্পষ্ট করে তাঁর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগের কথা বলছে না। তবে জানা যাচ্ছে, এসবের বাইরে সিনিয়রদেরও বিরাগভাজন হয়েছিলেন শরীফ উদ্দিন।
ঢাকা থেকে কক্সবাজারে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে একটি দুর্নীতিবিরোধী সভায় যান দুদকের তৎকালীন সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার। সেখানে সপরিবারে বিলাসবহুল পাঁচ তারকা হোটেলে দুই রাত কাটিয়ে লক্ষাধিক টাকা বিল করেছিলেন। তাঁর যাবতীয় বিল পরিশোধ করে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও দুদকের অধস্তনেরা। এই বিল নিয়ে শুরুতেই আপত্তি জানিয়েছিলেন সম্প্রতি বরখাস্ত হওয়া দুদকের উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন। তিনি তখন সচিবের প্রটোকল কর্মকর্তা ছিলেন।
সচিবের ওই ঘটনা নিয়ে ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে শরীফের মনোমালিন্য তৈরি হয়। এর পরই গত বছরের ১৬ জুন দুদকের প্রধান কার্যালয়ের এক আদেশে তাঁকে চট্টগ্রাম থেকে পটুয়াখালীতে বদলি করা হয়।
অনেকে ধারণা করছেন, দুদক কর্মকর্তার হঠাৎ বদলির পেছনে অনেকগুলো কারণের মধ্যে সচিবের বিল পরিশোধ না করাও একটি। আজ শুক্রবার শরীফ উদ্দিনও একই ধারণার কথা আজকের পত্রিকাকে জানান।
দুদকের তৎকালীন সচিবের ওই সফর নিয়ে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন, দুদক ও জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সফরসংশ্লিষ্ট অন্তত চারজনের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তাঁরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সফরে এসে সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার কক্সবাজারের দুটি হোটেলে ছিলেন। প্রথমে ছিলেন সৈকত এলাকার পাঁচ তারকা হোটেল সায়মন বিচ রিসোর্টে। পরে ওঠেন হোটেল সেন্ট মার্টিন রিসোর্টে। সচিব সেখানে সপরিবারে ছিলেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষে সচিবের প্রটোকলের দায়িত্বে ছিলেন তৎকালীন এনডিসি সহকারী কমিশনার মাখন চন্দ্র সূত্রধর। অন্যদিকে রাজস্ব শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে ছিলেন সিনিয়র সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ জাফর সাদিক চৌধুরী। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ দুই কর্মকর্তার হাত দিয়ে সচিবের বিলের টাকা পরিশোধ করা হয়। আর দুদকের পক্ষ থেকে বিলের একটি অংশ পরিশোধ করেন শরীফ উদ্দিন। দুদক সচিবের হোটেল দুটিতে থাকা এবং বাইরে খাওয়া বাবদ সব বিলই কক্সবাজার ডিসির নামে করা হয়।
জানা যায়, সচিবের হোটেল সেন্টমার্টিন রিসোর্টে থাকা বাবদ ৩৫ হাজার টাকার বিল পরিশোধ করেন দুদকের কর্মকর্তা শরীফ। এ ছাড়া হোটেল সায়মন রিসোর্টে একটি ভ্যাটের চালানে দেখা যায়, হোটেলটির ৭৩ হাজার ৯৬১ টাকার বিল পরে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নামে পরিশোধ হয়। সফরকালে দুদক সচিবের খাবারের বিল বাবদ ৩৮ হাজার ৩৬০ টাকাও কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নামে হয়েছিল।
জানা গেছে, এসব টাকা সচিবের ব্যক্তিগত খরচ হওয়ায় প্রথমে দুদকের প্রটোকল কর্মকর্তা বিলগুলো পরিশোধে আপত্তি জানান।
সফরসংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে জানা গেছে, সচিবের সঙ্গে পরিবারের সদস্যসহ বেশ কয়েকজন প্রশাসনিক কর্মকর্তাও ছিলেন।
জানতে চাইলে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের তৎকালীন রাজস্ব শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিনিয়র সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ জাফর সাদিক চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আমি তখন ছিলাম না।’ ওই সফরের পর দুদক সচিবের একান্ত সচিব হিসেবে নিয়োগ পান জাফর সাদিক।
তৎকালীন কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সচিবের প্রটোকলের দায়িত্বে থাকা মাখন চন্দ্র সূত্রধর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সচিব মহোদয়ের থাকা বাবদ হোটেলগুলোর বিলের টাকা পুরোটাই জেলা প্রশাসন পরিশোধ করেনি, কিছু বিল পরিশোধ করেছে। আর কত টাকা পরিশোধ করা হয়েছিল, সেটা এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। এটা জেনে বলতে হবে। কারণ ওই ঘটনার পর আমি এসি (ল্যান্ড) হিসেবে অন্য জায়গায় বদলি হয়ে এসেছি। আমি কক্সবাজারের বর্তমান এনডিসির নম্বরটা দিচ্ছি। ওনার সঙ্গে কথা বলতে পারেন।’
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের বর্তমান এনডিসি ইমরান জাহিদ খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সরকারি সফরে আসা কোনো সচিব বা কর্মকর্তার হোটেলে থাকা বাবদ বিল আমার জানামতে ডিসি অফিস থেকে পরিশোধ করা হয় না। আমার চাকরিজীবনে কখনো এভাবে বিল পরিশোধ করতে দেখিনি।’
এনডিসি বলেন, ‘দুদক সচিবের সফরকালে আমার জায়গায় তখন অন্যজন দায়িত্বে ছিলেন। সেই বিল কীভাবে পরিশোধ হয়েছিল তা উনিই (তৎকালীন এনডিসি) বলতে পারবেন।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চাকরিচ্যুত দুদক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, ‘কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুদক সচিবের দুটি হোটেলের বিল বাবদ ১ লাখ ১২ হাজার টাকার মতো পরিশোধ করতে বলা হয়েছিল। এসব টাকা ওনার ব্যক্তিগত খরচ ছিল। কিন্তু বিলটি পরিশোধের বিষয়ে আমি আপত্তি জানাই। ব্যক্তিগত খরচের টাকা প্রতিষ্ঠান থেকে কেন পরিশোধ করা হবে? পরে সিনিয়রদের মধ্যস্থতায় আমরা একটি হোটেলের বিলের টাকা পরিশোধ করি। শুনেছি, বাকি বিল জেলা প্রশাসন থেকে পরিশোধ করা হয়েছে।’
সচিব সফরের তিন মাসের মধ্যে সরকারের এক প্রজ্ঞাপনে দুদক সচিবের একান্ত সচিব হিসেবে নিয়োগ পান কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের রাজস্ব শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বে থাকা সিনিয়র সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ জাফর সাদেক চৌধুরী। পৃথক আরেকটি প্রজ্ঞাপনে মাখন চন্দ্র সূত্রধর নিজ বিভাগে সহকারী কমিশনার ভূমি হিসেবে পদায়ন পান।
সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) নগর সভাপতি ও সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চট্টগ্রামের সম্পাদক অ্যাডভোকেট আখতারুল কবির চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সরকারি সফরে আমলাদের জন্য সার্কিট হাউসগুলো বরাদ্দ থাকে। সার্কিট হাউসগুলো কোনো কারণে খালি না থাকলে সরকারি, আধা সরকারিসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের রাজকীয় রেস্ট হাউস রয়েছে। কিন্তু সরকারি সফরে যাওয়া কোনো কর্মকর্তা বাংলাদেশের মধ্যে ফাইভ স্টার হোটেলগুলোতে থাকার কোনো সুযোগ নেই। কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অধীন হলে তা ভিন্ন কথা।’
আখতারুল কবির বলেন, ‘এখানে নয়ছয় হয়েছে। আমলাতান্ত্রিকতার এমন চর্চার রাশ টেনে ধরা জরুরি।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার ২০১৯ সালের ৯ নভেম্বর থেকে ২০২০ সালের ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত খুলনার বিভাগীয় কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি দুদকের সচিব হিসেবে যোগ দেন। গত বছরের ডিসেম্বরে এক বছরের মাথায় তিনি মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে বদলি হন।
এ বিষয়ে ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদারের নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। মেসেজ পাঠিয়েও কোনো সাড়া মেলেনি।
আরও পড়ুন:
প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে তদন্ত করার কারণেই চাকরি হারিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপসহাকারী পরিচালন মো. শরীফ উদ্দিন। এমনটাই মনে করছেন অনেকে। যদিও দুদক স্পষ্ট করে তাঁর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগের কথা বলছে না। তবে জানা যাচ্ছে, এসবের বাইরে সিনিয়রদেরও বিরাগভাজন হয়েছিলেন শরীফ উদ্দিন।
ঢাকা থেকে কক্সবাজারে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে একটি দুর্নীতিবিরোধী সভায় যান দুদকের তৎকালীন সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার। সেখানে সপরিবারে বিলাসবহুল পাঁচ তারকা হোটেলে দুই রাত কাটিয়ে লক্ষাধিক টাকা বিল করেছিলেন। তাঁর যাবতীয় বিল পরিশোধ করে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও দুদকের অধস্তনেরা। এই বিল নিয়ে শুরুতেই আপত্তি জানিয়েছিলেন সম্প্রতি বরখাস্ত হওয়া দুদকের উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন। তিনি তখন সচিবের প্রটোকল কর্মকর্তা ছিলেন।
সচিবের ওই ঘটনা নিয়ে ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে শরীফের মনোমালিন্য তৈরি হয়। এর পরই গত বছরের ১৬ জুন দুদকের প্রধান কার্যালয়ের এক আদেশে তাঁকে চট্টগ্রাম থেকে পটুয়াখালীতে বদলি করা হয়।
অনেকে ধারণা করছেন, দুদক কর্মকর্তার হঠাৎ বদলির পেছনে অনেকগুলো কারণের মধ্যে সচিবের বিল পরিশোধ না করাও একটি। আজ শুক্রবার শরীফ উদ্দিনও একই ধারণার কথা আজকের পত্রিকাকে জানান।
দুদকের তৎকালীন সচিবের ওই সফর নিয়ে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন, দুদক ও জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সফরসংশ্লিষ্ট অন্তত চারজনের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তাঁরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সফরে এসে সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার কক্সবাজারের দুটি হোটেলে ছিলেন। প্রথমে ছিলেন সৈকত এলাকার পাঁচ তারকা হোটেল সায়মন বিচ রিসোর্টে। পরে ওঠেন হোটেল সেন্ট মার্টিন রিসোর্টে। সচিব সেখানে সপরিবারে ছিলেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষে সচিবের প্রটোকলের দায়িত্বে ছিলেন তৎকালীন এনডিসি সহকারী কমিশনার মাখন চন্দ্র সূত্রধর। অন্যদিকে রাজস্ব শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে ছিলেন সিনিয়র সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ জাফর সাদিক চৌধুরী। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ দুই কর্মকর্তার হাত দিয়ে সচিবের বিলের টাকা পরিশোধ করা হয়। আর দুদকের পক্ষ থেকে বিলের একটি অংশ পরিশোধ করেন শরীফ উদ্দিন। দুদক সচিবের হোটেল দুটিতে থাকা এবং বাইরে খাওয়া বাবদ সব বিলই কক্সবাজার ডিসির নামে করা হয়।
জানা যায়, সচিবের হোটেল সেন্টমার্টিন রিসোর্টে থাকা বাবদ ৩৫ হাজার টাকার বিল পরিশোধ করেন দুদকের কর্মকর্তা শরীফ। এ ছাড়া হোটেল সায়মন রিসোর্টে একটি ভ্যাটের চালানে দেখা যায়, হোটেলটির ৭৩ হাজার ৯৬১ টাকার বিল পরে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নামে পরিশোধ হয়। সফরকালে দুদক সচিবের খাবারের বিল বাবদ ৩৮ হাজার ৩৬০ টাকাও কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নামে হয়েছিল।
জানা গেছে, এসব টাকা সচিবের ব্যক্তিগত খরচ হওয়ায় প্রথমে দুদকের প্রটোকল কর্মকর্তা বিলগুলো পরিশোধে আপত্তি জানান।
সফরসংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে জানা গেছে, সচিবের সঙ্গে পরিবারের সদস্যসহ বেশ কয়েকজন প্রশাসনিক কর্মকর্তাও ছিলেন।
জানতে চাইলে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের তৎকালীন রাজস্ব শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিনিয়র সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ জাফর সাদিক চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আমি তখন ছিলাম না।’ ওই সফরের পর দুদক সচিবের একান্ত সচিব হিসেবে নিয়োগ পান জাফর সাদিক।
তৎকালীন কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সচিবের প্রটোকলের দায়িত্বে থাকা মাখন চন্দ্র সূত্রধর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সচিব মহোদয়ের থাকা বাবদ হোটেলগুলোর বিলের টাকা পুরোটাই জেলা প্রশাসন পরিশোধ করেনি, কিছু বিল পরিশোধ করেছে। আর কত টাকা পরিশোধ করা হয়েছিল, সেটা এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। এটা জেনে বলতে হবে। কারণ ওই ঘটনার পর আমি এসি (ল্যান্ড) হিসেবে অন্য জায়গায় বদলি হয়ে এসেছি। আমি কক্সবাজারের বর্তমান এনডিসির নম্বরটা দিচ্ছি। ওনার সঙ্গে কথা বলতে পারেন।’
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের বর্তমান এনডিসি ইমরান জাহিদ খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সরকারি সফরে আসা কোনো সচিব বা কর্মকর্তার হোটেলে থাকা বাবদ বিল আমার জানামতে ডিসি অফিস থেকে পরিশোধ করা হয় না। আমার চাকরিজীবনে কখনো এভাবে বিল পরিশোধ করতে দেখিনি।’
এনডিসি বলেন, ‘দুদক সচিবের সফরকালে আমার জায়গায় তখন অন্যজন দায়িত্বে ছিলেন। সেই বিল কীভাবে পরিশোধ হয়েছিল তা উনিই (তৎকালীন এনডিসি) বলতে পারবেন।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চাকরিচ্যুত দুদক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, ‘কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুদক সচিবের দুটি হোটেলের বিল বাবদ ১ লাখ ১২ হাজার টাকার মতো পরিশোধ করতে বলা হয়েছিল। এসব টাকা ওনার ব্যক্তিগত খরচ ছিল। কিন্তু বিলটি পরিশোধের বিষয়ে আমি আপত্তি জানাই। ব্যক্তিগত খরচের টাকা প্রতিষ্ঠান থেকে কেন পরিশোধ করা হবে? পরে সিনিয়রদের মধ্যস্থতায় আমরা একটি হোটেলের বিলের টাকা পরিশোধ করি। শুনেছি, বাকি বিল জেলা প্রশাসন থেকে পরিশোধ করা হয়েছে।’
সচিব সফরের তিন মাসের মধ্যে সরকারের এক প্রজ্ঞাপনে দুদক সচিবের একান্ত সচিব হিসেবে নিয়োগ পান কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের রাজস্ব শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বে থাকা সিনিয়র সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ জাফর সাদেক চৌধুরী। পৃথক আরেকটি প্রজ্ঞাপনে মাখন চন্দ্র সূত্রধর নিজ বিভাগে সহকারী কমিশনার ভূমি হিসেবে পদায়ন পান।
সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) নগর সভাপতি ও সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চট্টগ্রামের সম্পাদক অ্যাডভোকেট আখতারুল কবির চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সরকারি সফরে আমলাদের জন্য সার্কিট হাউসগুলো বরাদ্দ থাকে। সার্কিট হাউসগুলো কোনো কারণে খালি না থাকলে সরকারি, আধা সরকারিসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের রাজকীয় রেস্ট হাউস রয়েছে। কিন্তু সরকারি সফরে যাওয়া কোনো কর্মকর্তা বাংলাদেশের মধ্যে ফাইভ স্টার হোটেলগুলোতে থাকার কোনো সুযোগ নেই। কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অধীন হলে তা ভিন্ন কথা।’
আখতারুল কবির বলেন, ‘এখানে নয়ছয় হয়েছে। আমলাতান্ত্রিকতার এমন চর্চার রাশ টেনে ধরা জরুরি।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার ২০১৯ সালের ৯ নভেম্বর থেকে ২০২০ সালের ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত খুলনার বিভাগীয় কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি দুদকের সচিব হিসেবে যোগ দেন। গত বছরের ডিসেম্বরে এক বছরের মাথায় তিনি মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে বদলি হন।
এ বিষয়ে ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদারের নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। মেসেজ পাঠিয়েও কোনো সাড়া মেলেনি।
আরও পড়ুন:
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপির) উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করেছেন বিএনপি নেতা। সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যায় বিএনপিকে জড়িয়ে অপপ্রচার করার অভিযোগে গাজীপুর আদালতে এ মামলা করেছেন তিনি।
১২ আগস্ট ২০২৫লক্ষ্মীপুরে রামগতিতে নৌকায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ ফারুক হোসেন (৪০) নামে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন দুজন। এখনো চিকিৎসাধীন অবস্থায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন আরও দুজন। আজ মঙ্গলবার ভোরে জাতীয় বার্ন প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফারুক হোসেন মারা যান।
১২ আগস্ট ২০২৫দুই বছর আগে ফেনী পৌরসভার সুমাইয়া হোসেন আনিকা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উদ্যোগে ফ্রিল্যান্সিং ও গ্রাফিক ডিজাইনের প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। এরপর বিভিন্ন অনলাইন প্রতিষ্ঠানে চাকরির চেষ্টা করেও সফল হননি। এখন স্বামীর অনলাইন ব্যবসা দেখাশোনা করছেন। আনিকা বলেন, ‘প্রশিক্ষণ পেয়েছি, কিন্তু কাজের সুযোগ খুবই কম।’ আনিকার
১২ আগস্ট ২০২৫চট্টগ্রাম বন্দরে আন্দোলন দমাতে টাকা দাবির ভিডিও ভাইরালের পর এবার জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) চট্টগ্রাম নগরের যুগ্ম সমন্বয়কারী নিজাম উদ্দিনকে কেন্দ্র থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁকে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না তাঁর লিখিত ব্যাখা আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দলকে জানানো কথা বলা হয়েছে।
১২ আগস্ট ২০২৫