Ajker Patrika

চাঁদপুরে এখনো ৩০ ভাগ পানির উৎস আর্সেনিকযুক্ত

চাঁদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১২ এপ্রিল ২০২৩, ১০: ৫৩
চাঁদপুরে এখনো ৩০ ভাগ পানির উৎস আর্সেনিকযুক্ত

পদ্মা, মেঘনা, ডাকাতিয়া ও ধনাগোদা নদী উপকূলীয় জেলা চাঁদপুর। একসময় এই জেলার প্রায় ৯৫ ভাগ মানুষ আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করত। এতে আর্সেনিক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যাও ছিল প্রায় ৮ হাজার। বর্তমানে এ জেলার প্রায় ২৬ লাখ মানুষের মধ্যে ৭০ ভাগ মানুষের জন্য পানির উৎস আর্সেনিকমুক্ত ও নিরাপদ। তবে ৩০ ভাগ পানির উৎস আর্সেনিকযুক্ত এবং অনিরাপদ বলে জানিয়েছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। 

চাঁদপুর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের তথ্যে জানা গেছে, ১৯৯৩ সালে প্রথম চাঁদপুরে নলকূপে আর্সেনিক শনাক্ত করা হয়। এরপর জেলার আট উপজেলার অধিকাংশ নলকূপের পানিতে আর্সেনিক শনাক্ত হতে থাকে। ধারাবাহিকতায় ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়তে থাকে জেলার সর্বত্র আর্সেনিকের থাবা। তবে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক থাকলেও এই অঞ্চলের মানুষের সচেতনতায় অনেকাংশেই রক্ষা পেয়েছে বিশাল জনপদ। মানুষ নলকূপের পানি পান করা থেকে বিরত থাকা এবং বিকল্প বিশুদ্ধ খাওয়ার পানি গ্রহণ করায় তারা রক্ষা পান। 

চাঁদপুরে আর্সেনিক রোগে আক্রান্ত এবং নিরাপদ পানি ব্যবহারের ওপর জনসচেতনতামূলক কাজ করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন চাঁদপুর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট সংস্থা। এই সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক সেলিম পাটওয়ারী বলেন, ‘২০০৪ সালে সরকারের আর্সেনিক মিটিগেশন প্রকল্পের আওতায় আমরা পাড়া-মহল্লায় জনসচেতনতামূলক কাজ করেছি। বিশেষ করে আমাদের মাঠ পর্যায়ের সমীক্ষায় আর্সেনিক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যাও কমে এসেছে। এখন এই ধরনের কোনো প্রকল্প নেই, যে কারণে পরিসংখ্যানও বলতে পারছি না। তবে সরকার এখন সচেতনতার চাইতে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থার ওপর বেশি জোর দিয়েছে।’ 

চাঁদপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের পরিসংখ্যান কর্মকর্তা তাহমিন আক্তার বলেন, ‘আর্সেনিকে আক্রান্ত রোগী এখন চাঁদপুর জেলায় নেই। এসংক্রান্ত কোনো রিপোর্ট উপজেলা থেকেও জেলায় আসে না। একসময় শাহরাস্তি উপজেলায় অনেক রোগী ছিল। চিকিৎসা দেওয়ার পর তারা সবাই এখন সুস্থ।’ 

চাঁদপুর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু মুসা মোহাম্মদ ফয়সাল বলেন, ‘চাঁদপুর জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে নিয়মিত গভীর নলকূপ স্থাপন ও পৌর এলাকায় পাম্প হাউস এবং ভূপৃষ্ঠের পানি শোধনাগার নির্মাণ করা হয়। ফলে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আমাদের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ৭০ ভাগ মানুষ আর্সেনিকমুক্ত নিরাপদ পানির আওতায় এসেছে। এই সংখ্যা আরও বেশিও হতে পারে। তবে সেই তথ্য আমাদের কাছে নেই। শতভাগ নিরাপদ পানির জন্য আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’ 

এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘সরকারের প্রত্যেক আর্থিক বছরে জেলায় বরাদ্দকৃত গভীর নলকূপ বসানো হচ্ছে। এ ছাড়া অনেকে ব্যক্তিগত খরচে গভীর নলকূপ বসান। সেই সংখ্যা আমাদের জানানো হয় না। কিংবা তাদের পানিতে আর্সেনিক আছে কি না, তা-ও নিশ্চিত হয় না পরীক্ষা না করায়। এ ছাড়া আমরা প্রতি উপজেলায় নলকূপের পানিতে আর্সেনিক আছে কি না তা নিয়মিত পরীক্ষা করে আসছি এবং একটি অ্যাপের মাধ্যমে উপজেলা কর্মকর্তারা আমাদের তথ্য দিচ্ছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত