Ajker Patrika

মুন্সিগঞ্জে আলুর ফলন ভালো হলেও বিপাকে চাষিরা

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
মুন্সিগঞ্জে আলুর ফলন ভালো হলেও বিপাকে চাষিরা

মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলায় জমি থেকে আলু উত্তোলনের কাজ প্রায় শেষ। তবে বাজারে আলুর দাম নিয়ে কৃষকরা হতাশ। পাইকাররা প্রতি মণ আলুর দাম হাঁকছেন সাড়ে ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকা। এই দামে আলু বিক্রি করলে চাষিদের লোকসান হবে। অন্যদিকে, আলু সংরক্ষণের হিমাগারেও দেখা দিয়েছে সঙ্কট।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বীরতারা, আটপাড়া ও তন্তরে এলাকায় আলু উত্তোলনের কাজ প্রায় শেষ। কুকুটিয়ার চাষিরা পুরোদমে আলু উত্তোলন করছেন। অল্প কিছু দিনের মধ্যে এ এলাকার আলু তোলাও শেষ হবে।

বীরতারা এলাকার কৃষক মো. আদিল বলেন, ‘আলু উঠানো শেষ। আলুর দাম কম তাই গোলাঘরে রেখে দিয়েছি। দাম কিছুটা বাড়লে বিক্রি করবো।’

ক্যাপশন- কোল্ডষ্টোরের সামনে বস্তা ভর্তি আলু। ছবি- আজকের পত্রিকা

কৃষকরা মাঠ থেকেই বস্তায় করে আলু বাড়ির গোলায় বা হিমাগারে পাঠাচ্ছেন। ইতিমধ্যেই শ্রীনগর চকবাজার, আটপাড়া ও তন্তরের সোন্ধারদিয়ায় থাকা ১টি করে হিমাগার আলুতে ভরপুর। শ্রীনগরের অনেক কৃষক পার্শ্ববর্তী লৌহজং উপজেলার নওপাড়া বাজারে অবস্থিত উদায়ন হিমাগার ও নওপাড়া কোল্ডষ্টোরে আলু রাখার চেষ্টা করছেন।

কোল্ডষ্টোরে জায়গা না পাওয়ায় অনেকে আলু বস্তায় ভরে হিমাগারগুলোর আশপাশের রাস্তায় রেখেছেন। প্রত্যাশিত দাম না পেলেও অনেক চাষি বাধ্য হয়ে আলু বিক্রি করে দিচ্ছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শ্রীনগরের ১৪টি ইউনিয়নে কমবেশি আলুর চাষ হয়। এরমধ্যে বীরতারা, তন্তর, আটপাড়া ও কুকুটিয়া ইউনিয়নে কৃষকরা অনেক বেশি জমিতে আলুর চাষ করেছেন। এ বছর শ্রীনগরে আলুর চাষ হয়েছে ২৩শ’ হেক্টরের বেশি জমিতে।

আলু তুলছেন চাষিরা। ছবি- আজকের পত্রিকা

কৃষকরা জানান, প্রতি কানি (১৪০ শতাংশ) জমিতে সাড়ে ৩শ’ মণ থেকে ৪শ’ মণ পর্যন্ত আলু ফলেছে। হিসেবে মাঠেই প্রতি মণ আলুতে খরচ ৬শ’ থেকে সাড়ে ৬শ’ টাকা। কিন্তু বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এ এলাকার পাইকারি বাজারে প্রতি মন আলু সর্বোচ্চ ৫শ’ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বর্তমান বাজার দরে আলু বিক্রি করলে চাষিদের বড় লোকসানের মুখে পরতে হবে।

আজই প্রথম আলু তোলা শুরু করছেন কুকুটিয়ার কৃষক মো. আলম মোল্লা। তিনি এবার ১৫ কানি জমিতে আলু চাষ করেছেন। কানিপ্রতি তাঁর খরচ পড়েছে ২ লাখ ২০ হাজার টাকা, ফলন আনুমানিক সাড়ে ৩শ’ মণ। তাঁর জমিতেই প্রতি মণ আলুর দাম পড়েছে প্রায় ৬৩০ টাকা। লোকসান এড়াতে তিনি এখন আলু বিক্রি না করে হিমাগারে রাখার চেষ্টা করছেন। তবে স্থানীয় হিমাগারে জায়গা পাচ্ছেন না।

অন্যদিকে, হিমাগারে আলু রাখতে হলেও গুনতে হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। প্রতিটি ৫০ কেজির আলুর বস্তা বাবদ ফি ২’শ টাকা। ফি অগ্রিম পরিশোধ করলে ১৫০ টাকা। আলু ফলানোর খরচ তুলতে হিমশিম খাওয়া কৃষকদের জন্য এ ফিও এখন মরার উপর খাড়ার ঘায়ের মতো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত